প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে সাথে এআই-জেনারেটেড ভিডিও বা ডিপফেইক তৈরি করা এখন আগের চেয়ে অনেক সহজ হয়ে গেছে। কিছু ভিডিও এতটাই বাস্তবসম্মত যে সাধারণ চোখে তা চেনা কঠিন। কিন্তু কিছু কৌশল ও টুলস ব্যবহার করে আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন কোন ভিডিওটি আসল আর কোনটি এআই তৈরি।
ডিপফেইক ভিডিও চেনার ৫টি কার্যকরী উপায়
১. মুখের অভিব্যক্তি ও আর্টিফিশিয়াল মুভমেন্ট খেয়াল করুন
এআই দ্বারা তৈরি ভিডিওগুলোতে মুখের ভাবভঙ্গিতে অস্বাভাবিকতা দেখা যায়। যেমন:
-
চোখের পলক কম পড়া বা অস্বাভাবিক গতিতে পড়া
-
ঠোঁটের মুভমেন্ট ও কথার সিঙ্ক মেলানো নেই
-
মুখের কিছু অংশ অস্পষ্ট বা বিকৃত দেখানো
এছাড়াও, ভিডিওতে হঠাৎ করে মাথার অবস্থান বা আলো পরিবর্তন হলে সেটি ডিপফেইক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
২. অডিও ও ভিডিওর সমন্বয় পরীক্ষা করুন
এআই জেনারেটেড ভিডিওতে অনেক সময় অডিও এবং ভিজ্যুয়াল সিঙ্ক মেলে না। বিশেষ করে যখন কেউ কথা বলছেন, তখন ঠোঁটের মুভমেন্ট স্বাভাবিক না লাগলে সতর্ক হোন।
৩. ব্যাকগ্রাউন্ডের অসঙ্গতি খুঁজে দেখুন
ডিপফেইক ভিডিওতে প্রায়ই ব্যাকগ্রাউন্ড ব্লার বা অস্বাভাবিক দেখায়। যেমন:
-
ছায়ার অবস্থান স্বাভাবিক না হওয়া
-
অবজেক্টের কিনারা অস্পষ্ট বা বিকৃত হওয়া
-
হঠাৎ করে রং বা লাইটিং পরিবর্তন হওয়া
৪. এআই ডিটেকশন টুলস ব্যবহার করুন
বিভিন্ন অনলাইন টুলস ব্যবহার করে আপনি ভিডিওটি এআই দ্বারা তৈরি কি না তা যাচাই করতে পারেন। কিছু জনপ্রিয় টুলস:
ক. Deepware Scanner
-
বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়।
-
ভিডিও আপলোড বা লিংক দিয়ে স্ক্যান করতে পারেন।
-
দ্রুত রেজাল্ট দেয়।
🔗 https://deepware.ai/
খ. Attestiv Video Authenticator
-
ফ্রি ও প্রিমিয়াম ভার্সন রয়েছে।
-
ফ্রি ব্যবহারে মাসে ৫টি ভিডিও স্ক্যান করা যায়।
-
ভিডিওর টেকনিক্যাল সাসপিশন স্কোর দেখায়।
🔗 https://attestiv.com/
গ. InVID ব্রাউজার এক্সটেনশন
-
ভিডিওর ফ্রেম ভেঙে বিশ্লেষণ করে।
-
ডিপফেইক শনাক্ত করতে সহায়তা করে।
🔗 https://www.invid-project.eu/
৫. সোর্স ও কনটেক্সট চেক করুন
-
ভিডিওর উৎস কোথায়? অফিশিয়াল চ্যানেল থেকে নাকি সন্দেহজনক সোর্স থেকে?
-
ভাইরাল হওয়ার আগে এর ক্রেডিবিলিটি কেমন ছিল?
-
খবরটি অন্য কোথাও ভেরিফাই করা যায় কি না?
সতর্ক থাকুন, সচেতন হোন
এআই প্রযুক্তি দিন দিন উন্নত হচ্ছে, তাই ডিপফেইক শনাক্ত করাও চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠছে। তবে উপরের পদ্ধতিগুলো মেনে চললে আপনি সহজেই ভুয়া ভিডিও চিহ্নিত করতে পারবেন।
মনে রাখবেন, যেকোনো সন্দেহজনক ভিডিও শেয়ার করার আগে দুবার ভেবে দেখুন। ভুয়া তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকুন এবং অন্যদেরও সচেতন করুন।
আরও পড়ুন: ডাক্তারদের চেয়েও ভালোভাবে রোগ নির্ণয় করতে পারবে এআই: বিস্তারিত
💡 আপনার কি কোনো এআই ভিডিও চেনার অভিজ্ঞতা আছে? কমেন্টে শেয়ার করুন!