বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী তানজিন তিশা। নাটক থেকে শুরু করে ওয়েব সিরিয়াল—বিভিন্ন মাধ্যমে নিজের অভিনয় দক্ষতার স্বাক্ষর রাখছেন তিনি। সম্প্রতি একটি টক শোতে অংশ নিয়ে তিনি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা বলতে গিয়ে জানিয়েছিলেন, “আমি মা হতে চাই।” কিন্তু এই সরল স্বীকারোক্তিই তাকে নিয়ে এনেছে বিতর্কের ঝড়!
টক শোতে তিশার মন্তব্য
নিউইয়র্ক থেকে সম্প্রচারিত ‘ফ্রাইডে নাইট উইথ জায়েদ খান’ শোতে উপস্থাপক জায়েদ খান তানজিন তিশাকে প্রশ্ন করেছিলেন, “পাঁচ বছর পর নিজেকে কোথায় দেখতে চাও?” উত্তরে তিশা বলেছিলেন, “আমি মা হবো। এর মধ্যে বিয়ে করব এবং সন্তানের মা হতে চাই।”
তিনি আরও যোগ করেন, “অনেকে হয়তো এভাবে বলবে না, কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনও গুরুত্বপূর্ণ। একে এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই।”
গোপন সন্তানের অভিযোগ
তিশার এই মন্তব্যের পরই প্রবাসী সাংবাদিক জাওয়াদ নির্ঝর ফেসবুকে তিনটি ছবি শেয়ার করে দাবি করেন, এগুলো তানজিন তিশার গোপন সন্তানের ছবি!
নির্ঝর তার পোস্টে লিখেন, “সেলিব্রিটি হওয়ার পর কি কেউ নিজের সন্তানকেও অস্বীকার করতে পারে? তানজিন তিশা দাবি করেছেন, তার আগের বিয়ে ও পুত্রসন্তানের খবর মিথ্যা। কিন্তু এই ছবিগুলো তার মিডিয়ায় আসার আগের। তার সাবেক স্বামী এখন দুবাইতে থাকেন, আর তাদের সন্তান ঢাকায় দাদির সঙ্গে থাকে।”
তিনি আরও চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন, “তিশা, আপনি প্রমাণ করুন এই বাচ্চাটি আপনার নয়!”
তিশার জবাব: ২০,০০০ ডলার পুরস্কার!
এই অভিযোগের জবাবে তানজিন তিশা ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন, যা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। তিনি লিখেছেন:
“অসভ্যদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ! যারা আমার আদরের ভাগ্নে-ভাগ্নিদের ছবি বিকৃত করে ‘গোপন সন্তান’ বলে চালিয়ে দিচ্ছে, তাদের বলছি—আমার লুকিয়ে রাখা যত ‘বাচ্চাকাচ্চা’ আছে, তাদের আমার কাছে পৌঁছে দিলে ২০,০০০ ডলার পুরস্কার দেব! যদি পারো না, তবে নিজের গালে জুতা মারো তালে তালে!”
তিশার এই রসাত্মক কিন্তু কঠোর জবাব ফ্যানদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে। অনেকে তাকে সমর্থন জানিয়ে লিখেছেন, “এরা শুধু নোংরা রাজনীতি করছে। আপনি সত্য কথা বলেছেন।” আবার কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, “যদি সত্যিই তার সন্তান না হয়, তাহলে কেন এত বড় অভিযোগ?”
সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়া দুই ভাগে বিভক্ত। একপক্ষ তিশাকে সমর্থন করছে, অন্যপক্ষ সাংবাদিকের দাবিকে সত্যি বলে মনে করছে। কিছু ব্যবহারকারী প্রশ্ন তুলেছেন:
-
“যদি সন্তান না-ই হয়, তাহলে ছবিগুলো কার?”
-
“সেলিব্রিটিদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে এত মিথ্যা অভিযোগ কেন?”
-
“এটা কি খ্যাতি বাড়ানোর কৌশল নাকি সত্যি কোনো গোপন তথ্য ফাঁস?”
কোন পক্ষে সত্য?
এখন পর্যন্ত তানজিন তিশা বা তার প্রতিনিধি পক্ষ থেকে কোনো আইনি নোটিশ বা আনুষ্ঠানিক বিবৃতি আসেনি। তবে তিশার ফেসবুক পোস্ট থেকে বোঝা যায়, তিনি এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যমূলক বলে মনে করছেন।
সতর্কতা: গুজব থেকে সাবধান!
ইন্টারনেটে কোনো গুজব ছড়ানোর আগে সত্যতা যাচাই করা জরুরি। গুজব শুধু ব্যক্তির সম্মানহানি করে না, আইনগত সমস্যাও ডেকে আনতে পারে। গুগল অ্যাডসেন্সের নীতিমালা অনুযায়ী, ভুয়া খবর বা আপত্তিকর কন্টেন্ট প্রকাশ করলে অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট বাতিল হতে পারে।
শেষ কথা
তানজিন তিশার এই ঘটনা আমাদের আবারও মনে করিয়ে দিল—সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো তথ্য শেয়ার করার আগে যাচাই করা কতটা জরুরি। সেলিব্রিটিদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে গুজব ছড়ানো নৈতিকভাবে ভুল এবং আইনগত অপরাধও হতে পারে।
আরও পড়ুন: এন্ড্রু কিশোর: সুরের আকাশে এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম
আপনার মতামত কী? তানজিন তিশার পক্ষে, নাকি সাংবাদিকের দাবি সত্য বলে মনে করেন? কমেন্টে জানান!