রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশের প্রথম পর্ব শুরু হয়েছে। শনিবার (তারিখ) সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে ইসলামী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই সমাবেশের সূচনা হয়।
সমাবেশের সূচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
সমাবেশের প্রথম পর্বে ইসলামী সংগীতশিল্পী ও গীতিকার সাইফুল্লাহ মানসুরের সঞ্চালনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। এতে সাইমুম শিল্পী গোষ্ঠীসহ বিভিন্ন ইসলামী সাংস্কৃতিক সংগঠন অংশগ্রহণ করে। ইসলামী গজল, নাত ও দেশাত্মবোধক গানের মাধ্যমে সমাবেশের পরিবেশ তৈরি করা হয়।
ব্যাপক জনসমাগম
গতকাল (শুক্রবার) সন্ধ্যা থেকেই জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসতে শুরু করেন। আজ সকালে বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল করে হাজার হাজার সমর্থক সমাবেশস্থলে জমায়েত হন। ফলে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় ঐতিহাসিক এই ময়দান।
সমাবেশের সাত দফা দাবি
জামায়াতে ইসলামী এই সমাবেশের মাধ্যমে সরকারের কাছে সাত দফা দাবি উত্থাপন করেছে। তাদের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে:
-
নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন: অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা।
-
গণহত্যার বিচার: অতীতের সব গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করা।
-
মৌলিক সংস্কার: রাষ্ট্রীয় ও প্রশাসনিক পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সংস্কার বাস্তবায়ন।
-
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন: জুলাই মাসের ঐতিহাসিক সনদ ও ঘোষণাপত্র অনুযায়ী শাসন ব্যবস্থা গঠন।
-
শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন: জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের পরিবারের জন্য পুনর্বাসন ব্যবস্থা করা।
-
সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি (পিআর): জাতীয় নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি চালু করা।
-
প্রবাসী ভোটাধিকার: বিশ্বজুড়ে এক কোটিরও বেশি প্রবাসী বাংলাদেশীর ভোটাধিকার নিশ্চিত করা।
নিরাপত্তা ও পরিস্থিতি
সমাবেশে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখা গেছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মাঠের চারপাশে তৎপর রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
সমাবেশের পরবর্তী কর্মসূচি
প্রথম পর্বের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে সমাবেশের দ্বিতীয় পর্বে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখবেন বলে ধারনা করা হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকতে পারেন।
শেষ কথা
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতে ইসলামীর এই সমাবেশ রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন গতি সৃষ্টি করতে পারে কি না, তা এখন দেখার বিষয়। দলের নেতৃত্ব তাদের দাবিগুলোকে কীভাবে এগিয়ে নেন এবং সরকার বা অন্যান্য রাজনৈতিক দল এর কী প্রতিক্রিয়া দেখায়, সেটিই নির্ধারণ করবে ভবিষ্যৎ রাজনীতির গতিপথ।
আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে উত্তপ্ত পরিস্থিতি: কারফিউ বৃদ্ধি, গ্রেপ্তার ২৫
আপনার মতামত জানান: এই সমাবেশ ও জামায়াতে ইসলামীর দাবিগুলো সম্পর্কে আপনার মতামত কি? কমেন্টে শেয়ার করুন!