সারাদেশে ১১ দিনের জন্য ‘বিশেষ সতর্কতা’ জারি করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত এই সময়ে বিভিন্ন স্থানে নৈরাজ্য বা সহিংসতার ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) থেকে পাঠানো সতর্কবার্তায় এই সময়ে সরকারবিরোধী গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতা বৃদ্ধির সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
কেন এই সতর্কতা জারি করা হয়েছে?
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, কিছু রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন এই সময়ে অনলাইন ও অফলাইনে উসকানিমূলক কার্যক্রম চালাতে পারে। বিশেষ করে, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা, গণপরিবহন ও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পরিকল্পনা থাকতে পারে। এছাড়াও, সাইবার স্পেসে মিথ্যা তথ্য ও প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে সামাজিক অস্থিরতা তৈরি করার চেষ্টা হতে পারে।
কোন কোন বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে?
পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) সারাদেশের সব ইউনিটকে নিম্নলিখিত নির্দেশনা দিয়েছে:
-
সরকারি-বেসরকারি স্থাপনার নিরাপত্তা জোরদার – ব্যাংক, শপিং মল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও গুরুত্বপূর্ণ অফিসে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
-
সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও যানবাহন তল্লাশি – মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস ও অন্যান্য যানবাহন তল্লাশি করা হবে।
-
ট্রান্সপোর্ট হাবসে নজরদারি – বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট, রেলস্টেশন ও বিমানবন্দরে সতর্কতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
-
সাইবার নিরাপত্তা জোরদার – সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং ও গুজব রোধে বিশেষ টিম কাজ করছে।
-
গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিল – আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয়ভাবে অভিযান চালাচ্ছে।
জনসাধারণের করণীয়
এই সময়ে সবাইকে অতিরিক্ত সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে:
-
গুজব এড়িয়ে চলুন – সোশ্যাল মিডিয়ায় অপ্রমাণিত খবর শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন।
-
সন্দেহজনক কার্যক্রম রিপোর্ট করুন – কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা দেখলে স্থানীয় প্রশাসন বা পুলিশকে জানান।
-
প্রয়োজন ছাড়া বাইরে কম যান – বিশেষ করে রাতে একা চলাফেরা এড়িয়ে চলুন।
-
জরুরি নম্বরগুলো হাতের কাছে রাখুন – জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ বা স্থানীয় থানার নম্বর সেভ করে রাখুন।
সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থান
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, কোনো ধরনের অস্থিতিশীলতা কঠোর হাতে দমন করা হবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী স্পষ্ট করে বলেছেন, “যারা দেশে বা বিদেশ থেকে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উপসংহার
এই ১১ দিন বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ও শান্তি বজায় রাখার জন্য। জনগণের সহযোগিতা ও সচেতনতাই পারে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে। তাই সবাইকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন: চাঁদাবাজির অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী নেতা রিয়াদসহ চারজনের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন
সতর্ক থাকুন, নিরাপদ থাকুন।