ডিজিটাল নিরাপত্তা ও সিম ব্যবস্থাপনায় যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত
দেশের টেলিযোগাযোগ খাতকে আরও সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ করতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন থেকে একজন গ্রাহক তার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) এর বিপরীতে সর্বোচ্চ ১০টি মোবাইল সিম নিবন্ধন করতে পারবেন। এই সীমা অতিক্রম করলে অতিরিক্ত সিমগুলো ধাপে ধাপে বন্ধ করে দেওয়া হবে।
কী বলছে নতুন নিয়ম?
-
সিম সীমাবদ্ধতা: প্রতিটি এনআইডির বিপরীতে সর্বোচ্চ ১০টি সিম নিবন্ধন করা যাবে।
-
সময়সীমা: ১ আগস্ট, ২০২৪ থেকে প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং গ্রাহকদের ৩ মাস সময় দেওয়া হবে নিজেদের উদ্যোগে অতিরিক্ত সিম বাতিল করতে।
-
প্রক্রিয়ার সময়: পুরো বাস্তবায়নে ৫-৬ মাস লাগতে পারে বলে বিটিআরসি জানিয়েছে।
-
প্রভাব: এই সিদ্ধান্তে প্রায় ২৬ লাখ ব্যবহারকারীর ৬৭ লাখ সিম বন্ধ হয়ে যাবে।
কেন এই সিদ্ধান্ত?
বিটিআরসির তথ্য অনুসারে, দেশে বর্তমানে ৬ কোটি ৭৫ লাখ প্রকৃত সিম ব্যবহারকারী রয়েছেন। এর মধ্যে:
-
৮০.৩২% ব্যবহারকারীর ৫টি বা তার কম সিম রয়েছে।
-
১৬.২৩% ব্যবহারকারীর ৬-১০টি সিম রয়েছে।
-
মাত্র ৩.৪৫% ব্যবহারকারীর ১১-১৫টি সিম নিবন্ধিত আছে।
এই নিয়ম প্রণয়নের মূল উদ্দেশ্য হলো ডিজিটাল জালিয়াতি, সিম ভাড়াটে ব্যবসা এবং অননুমোদিত সিম ব্যবহার রোধ করা। এতে করে সাইবার অপরাধ ও ফ্রড কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গ্রাহকদের করণীয়
-
সিম চেক: *১৬০০১# ডায়াল করে যাচাই করুন আপনার এনআইডিতে কতটি সিম নিবন্ধিত আছে।
-
অতিরিক্ত সিম বাতিল: ১০টির বেশি সিম থাকলে দ্রুত অপারেটরের কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করে বাতিল করুন।
-
মালিকানা হস্তান্তর: প্রয়োজনে অতিরিক্ত সিমগুলো পরিবারের সদস্য বা অন্য কারও নামে ট্রান্সফার অব ওনারশিপ করতে পারেন।
অপারেটরদের ভূমিকা
মোবাইল অপারেটররা গ্রাহকদের কাছে বার্তা পাঠানো এবং ওয়েবসাইটে নোটিশ প্রকাশের মাধ্যমে সচেতনতা তৈরি করবে। প্রতি সপ্তাহে এসএমএসের মাধ্যমে গ্রাহকদের সতর্ক করা হবে।
শেষ কথা
এই সিদ্ধান্ত টেলিযোগাযোগ খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়াবে। গ্রাহকদের উচিত দ্রুত তাদের সিমের তথ্য যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া। বিটিআরসি ও অপারেটরদের সহযোগিতায় এই প্রক্রিয়া সহজ ও সুগম হবে বলে আশা করা যায়।
আপনার কী ১০টির বেশি সিম আছে? এখনই চেক করে নিন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিন!
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি বিজ্ঞানীদের অভিনব আবিষ্কার: প্লাস্টিকের টেকসই বিকল্প উদ্ভাবন