একটি বেওয়ারিশ কুকুরের ধাক্কায় প্রায় ঘটে যেতে পারত ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা। শনিবার (২ আগস্ট) সন্ধ্যায় কক্সবাজার বিমানবন্দরে এয়ার অ্যাস্ট্রার একটি ফ্লাইট উড্ডয়নের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় এমনই এক আতঙ্কজনক ঘটনা ঘটে। ভাগ্যক্রমে বিমানটির যাত্রী ও ক্রুদের কেউই আহত হননি, তবে এই ঘটনায় আবারও প্রশ্ন উঠেছে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। বিমানবন্দরে দূর্ঘটনা এর আগেও ঘটেছে।
ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ
সন্ধ্যা ৭টার দিকে, কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী এয়ার অ্যাস্ট্রার ফ্লাইটটি রানওয়েতে টেকঅফের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল। ঠিক সেই মুহূর্তে রানওয়ে দিয়ে দৌড়ে আসে একটি বেওয়ারিশ কুকুর। বিমানের সঙ্গে ধাক্কা লাগতেই ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় প্রাণীটি।
পাইলট দ্রুত ফ্লাইট অপারেশন বন্ধ করে নিরাপত্তা পরীক্ষা শুরু করেন। প্রায় এক ঘণ্টা পর তদন্ত ও যান্ত্রিক ত্রুটির পরীক্ষা শেষে বিমানটি আবারও উড্ডয়নের অনুমতি পায়। রাত ৮টা ৮ মিনিটে ফ্লাইটটি নিরাপদে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য
কক্সবাজার বিমানবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক গোলাম মর্তুজা জানান, “বিমানের ধাক্কায় কুকুরটি মারা গেছে, তবে যাত্রী ও ক্রু সদস্যদের কেউই ক্ষতিগ্রস্ত হননি। এটি একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা, যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “সন্ধ্যার পর বিমানবন্দরের রানওয়ে এলাকায় বেওয়ারিশ কুকুরের উপস্থিতি বেড়ে যায়, যা নিয়ন্ত্রণ করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।”
নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ
বর্তমানে কক্সবাজার বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে ১৮৯ জন আনসার সদস্য। কিন্তু রানওয়ে এলাকায় একটি কুকুরের প্রবেশ ফের প্রশ্ন তুলেছে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা প্রোটোকলের কার্যকারিতা নিয়ে।
বিমান নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রানওয়ে এমন একটি সংবেদনশীল জোন, যেখানে কোনো প্রাণীর প্রবেশ মারাত্মক দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। এর আগেও বিশ্বের বিভিন্ন বিমানবন্দরে প্রাণীর অনুপ্রবেশের কারণে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে।
কীভাবে প্রতিরোধ সম্ভব?
-
রানওয়ে ও এর আশেপাশের এলাকায় নিয়মিত প্যাট্রোল বাড়ানো।
-
ইনফ্রারেড ক্যামেরা ও মোশন সেন্সর ব্যবহার করে প্রাণীর গতিবিধি শনাক্ত করা।
-
বিমানবন্দরের বাউন্ডারি ওয়াল মজবুত করা যাতে কোনো প্রাণী ঢুকতে না পারে।
যাত্রীদের প্রতিক্রিয়া
ঘটনার সময় বিমানে থাকা যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। একজন যাত্রী জানান, “আমরা শুনতে পেলাম একটা ধাক্কার শব্দ, তারপরই বিমানটি থেমে যায়। পরে জানতে পারি একটি কুকুরের সঙ্গে ধাক্কা লেগেছে। ভাগ্য ভালো যে বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।”
শেষ কথা
এই ঘটনা থেকে স্পষ্ট, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করা প্রয়োজন। প্রাণীর অনুপ্রবেশ রোধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া না হলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার ঝুঁকি থেকেই যাবে।
আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় ৫ বছর বয়সী শিশু ধর্ষণ | নৃশংস ঘটনায় আসামি গ্রেপ্তার
আপনার কী মনে হয়? বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বাড়াতে কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত? কমেন্টে জানান আপনার মতামত।