বাণিজ্যিক যানবাহনের মেয়াদ ৩০ বছরসহ ৮ দফা দাবিতে আগামী ১২ আগস্ট থেকে সারাদেশে ৭২ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ও সংশ্লিষ্ট শ্রমিক সংগঠনগুলোর ঘোষণা অনুযায়ী, সরকার দাবিগুলো পূরণ না করলে সকাল ৬টা থেকে এই ধর্মঘট কার্যকর হবে।
কেন এই ধর্মঘট?
পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে:
-
সড়ক পরিবহন আইনের ৯৮ ও ১০৫ ধারা সংশোধন – দুর্ঘটনায় জড়িত চালকদের জামিন না দেওয়ার বিধান বাতিলের দাবি।
-
বাণিজ্যিক যানবাহনের মেয়াদ ৩০ বছর – বর্তমানে ২০ বছর পর গাড়ি ডাম্পিং করা হয়, যা বন্ধের আহ্বান।
-
অগ্রিম আয়কর বৃদ্ধি প্রত্যাহার – বাণিজ্যিক গাড়ির জন্য বাড়তি আয়কর রদ।
-
রিকন্ডিশনড গাড়ি আমদানির অনুমতি – ১২ বছর বয়সী গাড়ি আমদানির সুযোগ চাওয়া হয়েছে।
-
দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি দ্রুত ফেরত – ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গাড়ি মালিককে ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা।
-
স্ক্র্যাপ নীতিমালা প্রণয়ন – পুরোনো গাড়ির জন্য সঠিক নীতিমালা চাওয়া হয়েছে।
-
থ্রি-হুইলারের জন্য আলাদা লেন – মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহনের জন্য বিশেষ লেন।
-
ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রক্রিয়া সহজীকরণ – লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন দ্রুততর করার দাবি।
ধর্মঘটের প্রভাব
যদি এই ধর্মঘট কার্যকর হয়, তাহলে সারাদেশে সড়ক যোগাযোগ প্রায় অচল হয়ে পড়তে পারে। যাত্রী, পণ্য পরিবহন এবং দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় এর ব্যাপক প্রভাব পড়বে। বিশেষ করে বাস, ট্রাক, লরি এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
পরিবহন নেতাদের বক্তব্য
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি কফিল উদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা সরকারের কাছে সময় দিয়েছি। ১১ আগস্ট সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে দাবি পূরণ না হলে ধর্মঘট অনিবার্য।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “২০ বছরের বেশি পুরোনো গাড়ি ডাম্পিং করা হলে দেশের ৮০% যানবাহন সড়ক থেকে উঠে যাবে। গাড়ির বয়স নয়, ফিটনেস গুরুত্বপূর্ণ।”
সরকারের অবস্থান
পরিবহন নেতারা জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে তাদের দাবিগুলো যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে এবং দুটি দাবি পূরণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তবে বাকি দাবিগুলো না মানলে তারা আন্দোলন জোরদার করবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
নাগরিকদের কী করণীয়?
যদি ধর্মঘট কার্যকর হয়, তাহলে যাত্রীদের বিকল্প পরিবহনের ব্যবস্থা করতে হবে। অফিস, স্কুল-কলেজ বা জরুরি প্রয়োজনে হাঁটা পথ, রিকশা বা ব্যক্তিগত গাড়ির উপর নির্ভর করতে হতে পারে। এছাড়া, জরুরি ভ্রমণ প্ল্যান আগে থেকে করা উচিত।
শেষ কথা
এই ধর্মঘট শুধু পরিবহন সেক্টরের দাবি নয়, এটি সাধারণ মানুষের জীবনেও প্রভাব ফেলবে। সরকার ও পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে দ্রুত সমঝোতা হলে এই সংকট এড়ানো সম্ভব।
আরও পড়ুন: তারেক রহমান’ই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী: মির্জা ফখরুলের ঘোষণা
আপনার কী মতামত? এই ধর্মঘট কি যৌক্তিক, নাকি এর বিকল্প পথ থাকা উচিত? কমেন্টে জানান।