আয়কর রিটার্ন দাখিল করা প্রতিটি করদাতার আইনগত দায়িত্ব। তবে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে “জিরো রিটার্ন” নামে একটি বিভ্রান্তিকর ধারণা ছড়িয়ে পড়েছে, যা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সরাসরি অবৈধ ঘোষণা করেছে। এনবিআরের মতে, রিটার্নে মিথ্যা বা শূন্য তথ্য প্রদান করা ফৌজদারি অপরাধ এবং এর জন্য সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।
জিরো রিটার্ন কী এবং কেন অবৈধ
কিছু অনলাইন পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, আয়কর রিটার্নের প্রতিটি ঘরে শূন্য লিখে রিটার্ন জমা দেওয়া সম্ভব। কিন্তু এটি সম্পূর্ণ বেআইনি পদ্ধতি। আয়কর আইন-২০২৩ অনুযায়ী, করদাতাকে তার প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় রিটার্নে সঠিকভাবে উল্লেখ করতে হবে। কোনো ঘরে বা সব ঘরে শূন্য দেখানো প্রকৃত তথ্য গোপনের শামিল, যা আইনে দণ্ডনীয়।
আইনের ধারা ও শাস্তির বিধান
নতুন আয়কর আইনের ৩১২ ও ৩১৩ ধারায় উল্লেখ আছে—যদি কোনো করদাতা মিথ্যা তথ্য দেন বা প্রকৃত তথ্য গোপন করেন, তবে তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড আরোপ করা যেতে পারে। এমনকি করযোগ্য আয় না থাকলেও প্রকৃত তথ্য প্রদান বাধ্যতামূলক।
এনবিআরের সতর্কবার্তা
এনবিআর স্পষ্টভাবে জানিয়েছে—‘জিরো রিটার্ন’ দাখিল কোনো বৈধ প্রক্রিয়া নয়। যারা এ ধরনের মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর প্রচারণায় প্রলুব্ধ হয়ে রিটার্ন জমা দিচ্ছেন, তারা আইনি জটিলতায় পড়তে পারেন। প্রতিষ্ঠানটি করদাতাদের সতর্ক থেকে সৎভাবে রিটার্ন দাখিলের আহ্বান জানিয়েছে, যাতে দেশের উন্নয়ন ও সুশাসনে প্রত্যেকে ভূমিকা রাখতে পারেন।
উপসংহার
আয়কর রিটার্নে সঠিক তথ্য প্রদান শুধু আইনের দাবি নয়, এটি একজন নাগরিকের নৈতিক দায়িত্বও। মিথ্যা বা শূন্য তথ্য দিয়ে রিটার্ন জমা দিলে তা ব্যক্তিগত সুনাম, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও আইনি অবস্থার জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই সকল করদাতাকে সঠিক ও স্বচ্ছ তথ্য দিয়ে রিটার্ন দাখিলের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: এনসিপিসহ ১৬টি নতুন রাজনৈতিক দল ইসির প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ