ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান সংঘাতের মধ্যে আবারও সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। আল-জাজিরার পাঁচ সাংবাদিক ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন, যা আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দা কুড়াচ্ছে। নিহতদের মধ্যে অন্যতম আনাস আল-শরীফ, যিনি দীর্ঘদিন ধরে উত্তর গাজা থেকে প্রতিবেদন করে আসছিলেন।
ঘটনার বিস্তারিত
আল-জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, রবিবার (১০ আগস্ট) সন্ধ্যায় আল শিফা হাসপাতালের প্রধান ফটকের বাইরে স্থাপিত সাংবাদিকদের একটি তাঁবুতে ইসরায়েলি বাহিনী বিমান হামলা চালায়। এ হামলায় আল-জাজিরার পাঁচ সাংবাদিকসহ মোট সাতজন প্রাণ হারান।
নিহতদের পরিচয়
আল-জাজিরার নিহত সাংবাদিকরা হলেন—
-
আনাস আল-শরীফ (২৮)
-
মোহাম্মদ ক্রিকেহ (সংবাদদাতা)
-
ইব্রাহিম জাহের (ক্যামেরা অপারেটর)
-
মোহাম্মদ নওফাল
-
মোমেন আলিওয়া
আনাস আল-শরীফের শেষ সামাজিক মাধ্যম পোস্টে দেখা যায়, তিনি গাজা নগরীর পূর্ব ও দক্ষিণ অঞ্চলে তীব্র বোমাবর্ষণের কথা উল্লেখ করেছিলেন। তাঁর শেয়ার করা ভিডিওতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের শব্দ এবং আকাশে কমলা আলোর ঝলক ধরা পড়ে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি ও পাল্টা প্রতিক্রিয়া
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, আনাস আল-শরীফ হামাসের একটি শাখার নেতৃত্বে ছিলেন এবং তাদের কাছে এ সংক্রান্ত প্রমাণ আছে। তবে ইউরো-মেডিটেরেনিয়ান হিউম্যান রাইটস মনিটরের বিশ্লেষক মুহাম্মদ শেহাদা বলেন, “আনাসের সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ নেই। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে খবর প্রচার করাই ছিল তাঁর প্রতিদিনের কাজ।”
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
আল-জাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্ক গাজায় তাদের সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বাহিনীর ‘উসকানিমূলক প্রচারণা’ ও হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের অংশ, যা বারবার লঙ্ঘন করা হচ্ছে।
উপসংহার
গাজায় সাংবাদিকদের ওপর হামলা কেবল সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য নয়, বরং মানবাধিকারের জন্যও একটি বড় হুমকি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এই ধরণের হামলার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
আরও পড়ুন: ‘জিরো রিটার্ন’ দাখিল আইনবিরুদ্ধ: সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ড