যাত্রাবাড়ীতে যুবদল কর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের জামিন ও মামলা বাতিলের আবেদনের শুনানিতে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। হাইকোর্টের এজলাস কক্ষে রাষ্ট্রপক্ষ ও খায়রুল হকের পক্ষে থাকা আইনজীবীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি থেকে হাতাহাতির পর্যায়ে চলে যায় বিষয়টি।
আদালতের কার্যক্রম স্থগিত
মঙ্গলবার বিকেলে বিচারপতি জাকির হোসেন ও বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ ঘটনা ঘটে। শুনানি চলাকালে রাষ্ট্রপক্ষের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতকে জানান, অ্যাটর্নি জেনারেল এক সপ্তাহ সময় চেয়েছেন। এতে খায়রুল হকের পক্ষে থাকা আইনজীবীরা আপত্তি জানালে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে আদালত শুনানি স্থগিত করে আগামী ১৭ আগস্ট নতুন তারিখ নির্ধারণ করেন।
কী ঘটেছিল আদালতে?
খায়রুল হকের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম কে রহমান, কামরুল হক সিদ্দিকী, জেড আই খান পান্না, মোহসীন রশিদ, মোতাহার হোসেন সাজুসহ কয়েকজন আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা আগে থেকেই এজলাসে ছিলেন। শুনানি শুরুর পর সময় চাওয়ার বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয় এবং পরিস্থিতি হাতাহাতির দিকে গড়ায়।
খায়রুল হকের পক্ষে থাকা আইনজীবীরা বলেন, “তিনি দেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি, আমরা বিচার বিভাগের মর্যাদা রক্ষায় এখানে এসেছি।” জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা অতীতের ঘটনাগুলো তুলে ধরেন এবং তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান।
মামলার পটভূমি
এ বি এম খায়রুল হক ২০১০ সালের ১ অক্টোবর থেকে ২০১১ সালের ১৭ মে পর্যন্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্বে ছিলেন। তার নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় দেন, যা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অবৈধ ঘোষণা করে। অবসরের পর তিনি আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং কয়েক দফা পুনর্নিয়োগ পান।
২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর ১৩ আগস্ট তিনি আইন কমিশন থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের হয়। ২৪ জুলাই ঢাকার ধানমণ্ডি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। যাত্রাবাড়ীতে যুবদল কর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানায় দায়ের হওয়া অন্য এক মামলাতেও তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
আরও পড়ুন: রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী আটক: নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে উত্তপ্ত দিল্লি