অ্যাপলের আইফোন ১৭ সিরিজের আনুষ্ঠানিক উন্মোচনের আগেই বাজারে হাজির হয়েছে নকল সংস্করণ! চীনের বিভিন্ন নির্মাতা অ্যাপলের ডিজাইন কপি করে তৈরি করছে অ্যান্ড্রয়েড চালিত আইফোন ১৭, যা দেখতে হুবহু আসলের মতো। কিন্তু ভেতরে কী আছে? আসল আইফোন ১৭-এর সঙ্গে এর পার্থক্য কোথায়? চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
নকল আইফোন ১৭: দেখতে আসলের মতো, কিন্তু কর্মক্ষমতা সম্পূর্ণ ভিন্ন
সাম্প্রতিক সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হচ্ছে নকল আইফোন ১৭-এর ছবি ও ভিডিও। বিশেষ করে, আইফোন ১৭ প্রো মডেলের নকল সংস্করণগুলো বেশ চোখে পড়ছে। এগুলোতে অ্যাপলের লোগো, ডাইনামিক আইল্যান্ড এবং ফ্ল্যাট ক্যামেরা মডিউল দেওয়া হয়েছে, যা দেখতে অফিশিয়াল ফাঁস হওয়া ডিজাইনের মতোই। কিন্তু স্ক্রিন অন, ইন্টারফেস চেক করলেই বোঝা যায়—এগুলো আসলে অ্যান্ড্রয়েড চালিত স্মার্টফোন।
নকল আইফোন ১৭-এর লক্ষণীয় ত্রুটিগুলো:
-
স্ক্রিন কোয়ালিটি: আসল আইফোনে অ্যামোলেড ডিসপ্লে থাকলেও নকলগুলোতে সাধারণ এলসিডি প্যানেল ব্যবহার করা হয়, যা কম উজ্জ্বল ও কম রঙের স্পষ্টতা প্রদর্শন করে।
-
বেজেলের ভারসাম্যহীনতা: নিচের দিকের বেজেল অপেক্ষাকৃত চওড়া, যা অ্যাপলের ডিজাইনের সঙ্গে মেলে না।
-
অপারেটিং সিস্টেম: আইওএস-এর নকল ইন্টারফেস দেখা গেলেও এটি অ্যান্ড্রয়েড-ভিত্তিক, ফলে পারফরম্যান্স ও সিকিউরিটি কম।
-
বিল্ড কোয়ালিটি: নকল ফোনের বডি ম্যাটেরিয়ালে সস্তা প্লাস্টিক বা নিম্নমানের ধাতু ব্যবহার করা হয়, যা দীর্ঘস্থায়ী নয়।
আসল আইফোন ১৭-এর সম্ভাব্য স্পেসিফিকেশন (লিকারদের দাবি অনুযায়ী)
যদিও অ্যাপল এখনো কোনো তথ্য নিশ্চিত করেনি, তবুও বিভিন্ন লিকার ও টেক এক্সপার্টদের পূর্বাভাস অনুযায়ী আইফোন ১৭ প্রো-তে নিচের ফিচারগুলো থাকতে পারে:
-
প্রসেসর: নতুন ৩ ন্যানোমিটার A19 Pro চিপ, যা আগের চেয়ে ২০% বেশি পারফরম্যান্স দেবে।
-
ব্যাটারি: ৫,০০০ এমএএইচ ক্যাপাসিটি, আইফোনের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যাটারি।
-
ক্যামেরা: ৪৮ মেগাপিক্সেল টেলিফটো লেন্স (৫x-৮x অপটিক্যাল জুম), ২৪ মেগাপিক্সেল সেলফি ক্যামেরা।
-
ডিসপ্লে: অ্যান্টি-রিফ্লেক্টিভ কোটিংসহ ব্রাইটার ও এনার্জি-এফিশিয়েন্ট স্ক্রিন।
-
ডিজাইন: অ্যালুমিনিয়াম ইউনিবডি ফ্রেম, ম্যাগসেফ গ্লাস ব্যাক ও নতুন কালার অপশন (ডার্ক ব্লু ও কপার)।
নকল আইফোন কেনার ঝুঁকি
১. নিম্নমানের হার্ডওয়্যার: নকল ফোনে সস্তা কম্পোনেন্ট ব্যবহার করা হয়, যা দ্রুত নষ্ট হয়।
২. সিকিউরিটি ঝুঁকি: অ্যান্ড্রয়েড-ভিত্তিক নকল ফোনে ম্যালওয়্যার বা ডেটা চুরির সম্ভাবনা বেশি।
৩. সার্ভিস ও ওয়ারেন্টি: অ্যাপলের কোনো অফিশিয়াল সাপোর্ট বা ওয়ারেন্টি পাবেন না।
৪. রিসেল ভ্যালু: নকল ফোনের কোনো বাজারমূল্য নেই, বরং আইনি জটিলতায় পড়তে পারেন।
কীভাবে চিনবেন নকল আইফোন?
-
অ্যাপল স্টোর/অফিশিয়াল রিটেইলার থেকে কিনুন।
-
ডিভাইসের সিরিয়াল নম্বর অ্যাপলের ওয়েবসাইটে ভেরিফাই করুন (https://checkcoverage.apple.com)।
-
বক্সের কোয়ালিটি ও একসেসরিজ চেক করুন (নকলগুলোর প্যাকেজিং সাধারণত নিম্নমানের হয়)।
-
অ্যান্ড্রয়েড সেটআপ স্ক্রিন দেখলে সতর্ক হোন!
উপসংহার: অপেক্ষা করুন অফিশিয়াল লঞ্চের জন্য
নকল আইফোন ১৭ দেখতে আকর্ষণীয় মনে হলেও এটি আসলের বিকল্প নয়। অ্যাপলের আনুষ্ঠানিক লঞ্চ (সেপ্টেম্বর ২০২৫) পর্যন্ত অপেক্ষা করাই বুদ্ধিমানের কাজ। যদি প্রি-অর্ডার বা অফিশিয়াল রিলিজের আগেই কেউ “আইফোন ১৭” বিক্রির দাবি করে, তা ১০০% নকল।
আরও পড়ুন: টেলিগ্রামে নতুন ধরনের প্রতারণা: সতর্ক থাকার উপায়
সতর্ক থাকুন, সচেতন হোন এবং শুধুমাত্র অথোরাইজ্ড সেলার থেকেই কিনুন।