জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের পরিবারবর্গ ও মানবাধিকার সংগঠনের সদস্যরা আজ আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও সংশ্লিষ্ট বিচারপতিদের পদত্যাগের দাবিতে সচিবালয়ের দিকে একটি শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা পরিচালনা করেন। তাদের প্রধান অভিযোগ, বিগত বছরগুলোর রাজনৈতিক সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ডের মামলায় অভিযুক্তরা অবৈধভাবে জামিন পাচ্ছেন, যা ন্যায়বিচার ব্যবস্থাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।
প্রতিবাদের কারণ ও দাবি
বিক্ষোভকারীরা জানান, ২০১৮ সালের জুলাই মাসে শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ড ও সহিংসতার ঘটনায় অভিযুক্তরা সম্প্রতি আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। শহীদ পরিবারের সদস্যরা এটিকে “ন্যায়বিচারের পরিহাস” বলে উল্লেখ করে প্রশ্ন তোলেন, “যারা রাষ্ট্রীয় সংকটে জীবন দিয়েছেন, তাদের রক্তের মূল্য কি এভাবেই শূন্যে নামিয়ে আনা হবে?”
তাদের দাবি:
আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের অবিলম্বে পদত্যাগ
হত্যাকাণ্ডের মামলায় জামিন প্রদানকারী বিচারকদের অপসারণ
রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের সকল মামলা দ্রুত ও নিরপেক্ষভাবে নিষ্পত্তি
পুলিশি বাধা ও উত্তপ্ত পরিস্থিতি
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে বিক্ষোভকারীরা সচিবালয় অভিমুখে রওনা দিলে পুলিশ তাদের পথরোধ করে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কি ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদেরকে সচিবালয়ের আশেপাশে জমায়েত হতে না দিলে তারা সেখানে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন।
এক শহীদ পরিবারের সদস্য বলেন, “আমাদের স্বজনদের রক্তের বিনিময়ে যারা ক্ষমতায় এসেছেন, তারাই আজ সেই হত্যাকারীদের রক্ষা করছেন। আমরা ন্যায়বিচার চাই, রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা নয়।”
প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ কর্মসূচি
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে বাধা দেওয়া হয়নি, তবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, বিক্ষোভকারীরা আগামী সপ্তাহে আরও বড় আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন যদি তাদের দাবি পূরণ না হয়।
সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রভাব
এই ঘটনাটি ন্যায়বিচার, জবাবদিহিতা ও শাসন ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের ক্রমবর্ধমান অসন্তোষকে ফুটিয়ে তুলেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনৈতিক মামলাগুলোতে জামিনের হার বেড়ে যাওয়ায় জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে, যা রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ।
শেষ কথা
শহীদ পরিবার ও মানবাধিকার কর্মীদের এই আন্দোলন শুধু একটি মামলার জামিন নয়, বরং একটি systemic failure-এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। সরকার ও বিচার বিভাগের উচিত তাদের দাবি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। ন্যায়বিচারই পারে একটি জাতিকে প্রকৃত শান্তির পথে এগিয়ে নিতে।
আরও পড়ুন: রাবি অধ্যাপকের বিরুদ্ধে নারী শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ: তদন্ত চলছে
আপনার মতামত জানান: এই ঘটনাকে আপনি কীভাবে দেখছেন? ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আর কী পদক্ষেপ প্রয়োজন? কমেন্টে শেয়ার করুন।