হবিগঞ্জ জেলায় কর্মরত তিন পুলিশ সদস্যকে সম্প্রতি দাড়ি রাখার কারণে শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়েছিল। তবে কয়েক দিনের ব্যবধানে তারা আবারও আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পেয়েছেন। এই ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
শাস্তির প্রেক্ষাপট
২১ আগস্ট হবিগঞ্জের পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে জারি করা এক আদেশে জানানো হয়, অনুমতি ছাড়া দাড়ি রাখার কারণে তিনজন কনস্টেবলকে লঘুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। শাস্তি হিসেবে তাদের প্রত্যেককে দুই দিন ধরে প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে ‘পিডি’ (প্যারেড ড্রিল) করতে হয়। পুলিশ সুপার এ এন এম সাজেদুর রহমান স্বাক্ষরিত সেই আদেশে উল্লেখ করা হয়েছিল— সংশ্লিষ্ট সদস্যরা ইসলামী শরীয়াহ অনুযায়ী দাড়ি রাখতে আগ্রহী জানিয়ে লিখিত আবেদন জমা দেন, তবে অনুমতি নেওয়ার আগেই তারা দাড়ি রেখে হাজির হন। এজন্য তাদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়।
অনুমতি প্রদান
তবে এই ঘটনার পরদিনই (২২ আগস্ট) নতুন এক আদেশে তাদের দাড়ি রাখার আনুষ্ঠানিক অনুমতি দেওয়া হয়। একই পুলিশ সুপারের স্বাক্ষরিত ওই আদেশে বলা হয়, তিন পুলিশ সদস্যের আবেদন যথাযথভাবে বিবেচনা করে ইসলামী শরীয়াহ অনুসারে দাড়ি রাখার অনুমতি মঞ্জুর করা হলো।
কারা ছিলেন সেই তিন সদস্য?
আদেশ অনুযায়ী, অনুমতি পাওয়া তিন পুলিশ সদস্য হলেন—
সদর কোর্টে কর্মরত কনস্টেবল দুলাল মিয়া
অপরাধ শাখার কনস্টেবল হৃদয় আহমেদ
মোটরযান শাখার কনস্টেবল ইফতেখার হোসেন সুমন
সামাজিক প্রতিক্রিয়া
ঘটনার শুরুর দিকে অনুমতি ছাড়া দাড়ি রাখায় শাস্তি দেওয়ার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। অনেকেই বিষয়টিকে অযৌক্তিক হিসেবে দেখলেও, আবার কেউ কেউ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শৃঙ্খলা রক্ষার দিকটি সামনে এনেছেন। তবে পরবর্তীতে অনুমোদনের মাধ্যমে ঘটনাটি অনেকটাই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে।
উপসংহার
বাংলাদেশ পুলিশে শৃঙ্খলা বজায় রাখার পাশাপাশি সদস্যদের ধর্মীয় অনুশাসন পালনের অধিকারও রয়েছে। হবিগঞ্জের এই ঘটনাটি শৃঙ্খলা ও ধর্মীয় স্বাধীনতার সমন্বয় নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ভবিষ্যতে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণে হয়তো আরও পরিষ্কার নীতি প্রণয়ন করা হবে, যাতে সদস্যদের ব্যক্তিগত অনুশাসন ও পেশাগত নিয়ম একই সঙ্গে সমুন্নত থাকে।
আরও পড়ুন: কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদি গ্রেপ্তার: সিআইডির বিশেষ অভিযানে আটক