বাংলাদেশে চলমান বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সংঘটিত যাত্রাবাড়ী থানার একটি হত্যা মামলায় কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদিকে গ্রেপ্তারের পর এখন তাকে ৭ দিনের রিমান্ডে নিতে চেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক খান মো. এরফান সোমবার (২৫ আগস্ট) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রিমান্ড আবেদন দাখিল করেন। দুপুরে এ বিষয়ে আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে রোববার (২৪ আগস্ট) রাতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে সিআইডি সদস্যরা বরিশাল থেকে তৌহিদ আফ্রিদিকে গ্রেপ্তার করে। তিনি আলোচিত জুলাই গণহত্যা মামলার আসামি হিসেবেও অভিযুক্ত। তার গ্রেপ্তারের বিষয়টি সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তারের সময় তৌহিদ আফ্রিদির প্রতিক্রিয়া
গ্রেপ্তারের পর সাংবাদিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে তৌহিদ আফ্রিদি বলেন, তিনি কোনোভাবেই পালানোর চেষ্টা করেননি। বরং তিনি জানান, তার স্ত্রী বর্তমানে ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় তিনি মানসিক চাপে ছিলেন। বরিশালে অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি তার দাদার বাড়ি এবং বাবা গ্রেপ্তার হওয়ার পর তিনি দাদার কবর জিয়ারত করতে সেখানে গিয়েছিলেন।
এ সময় তিনি আরও দাবি করেন, “আমি পালাইনি, আমি কোরআনের কসম করে বলছি। আমি সম্প্রতি ওমরাহ পালন করেছি। আমি কেমন মানুষ তা সমাজ জানে।”
রিমান্ড আবেদন কেন?
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনো মামলার মূল তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ ও ঘটনার পেছনের প্রকৃত কারণ উদঘাটনের জন্য পুলিশ রিমান্ড আবেদন করে থাকে। যেহেতু তৌহিদ আফ্রিদির নাম হত্যা মামলায় এসেছে এবং গণহত্যা মামলার আসামি হিসেবেও তিনি আলোচিত, তাই তদন্তের স্বার্থে সিআইডি তার কাছ থেকে জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে পারে।
আদালতের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা
বর্তমানে আদালতে শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত তৌহিদ আফ্রিদির ভবিষ্যৎ আইনি প্রক্রিয়া নির্ভর করছে। আদালত যদি রিমান্ড মঞ্জুর করে, তবে আগামী কয়েকদিন পুলিশ হেফাজতে থেকে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আর যদি আদালত আবেদন খারিজ করে, তবে ভিন্ন প্রক্রিয়ায় তদন্ত এগিয়ে যাবে।
উপসংহার
তৌহিদ আফ্রিদির গ্রেপ্তার ও রিমান্ড আবেদন দেশের সামাজিক মাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। অনেকে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে কঠোর তদন্ত দাবি করছেন, আবার অনেকে মানবিক দিক বিবেচনার আহ্বান জানাচ্ছেন। এখন সবার দৃষ্টি আদালতের দিকে—যেখানে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নির্ধারিত হবে।
আরও পড়ুন: কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদি গ্রেপ্তার: সিআইডির বিশেষ অভিযানে আটক