বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে একসাথে ২৫ জনকে অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। তবে এর মধ্যে একজন রয়েছেন এনসিপি নেতা সারজিস আলমের শশুর। এর মধ্যে রয়েছেন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা, আইনজীবী এবং আইন কর্মকর্তারা। সোমবার (২৫ আগস্ট) রাতে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করে এই নিয়োগের ঘোষণা দেওয়া হয়।
নিয়োগ প্রক্রিয়া ও সাংবিধানিক দিক
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদের অধীনে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে পরামর্শক্রমে এবং সংবিধানের ৯৮ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে এই নিয়োগ দিয়েছেন। সর্বোচ্চ দুই বছরের জন্য এ নিয়োগ কার্যকর থাকবে এবং শপথ গ্রহণের পর থেকেই তা কার্যকর হবে।
লুৎফর রহমানের নিয়োগ নিয়ে আলোচনায়
এই নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে অন্যতম হলেন অ্যাডভোকেট মো. লুৎফর রহমান। তিনি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা সারজিস আলমের শ্বশুর। বিচারপতি হওয়ার আগে তিনি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার এই পদোন্নতি আইন মহলে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে।
যারা নিয়োগ পেয়েছেন
২৫ জন অতিরিক্ত বিচারকের মধ্যে রয়েছেন—
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আনোয়ারুল ইসলাম (শাহীন)
আইন ও বিচার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সাইফুল ইসলাম
চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ মো. নুরুল ইসলাম
আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহের
সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাজিউদ্দিন আহমেদ ও ফয়সাল হাসান আরিফ
আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব এস এম সাইফুল ইসলাম
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আসিফ হাসান ও মো. জিয়াউল হক
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল দিহিদার মাসুম কবীর
হবিগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ জেসমিন আরা বেগম
বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের সচিব মুরাদ–এ–মাওলা সোহেল
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন
সলিসিটর (সিনিয়র জেলা জজ) মো. রাফিজুল ইসলাম
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মনজুর আলম
মো. লুৎফর রহমান ও রেজাউল করিম
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফাতেমা আনোয়ার
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহমুদ হাসান
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুর রহমান
সৈয়দ হাসান যুবাইর
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ এম সাইফুল করিম
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী উর্মি রহমান
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম ইফতেখার উদ্দিন মাহমুদ
বিশ্লেষণ ও গুরুত্ব
হাইকোর্ট বিভাগে একসাথে ২৫ জন বিচারক নিয়োগ বিচার ব্যবস্থার দক্ষতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে। বাংলাদেশে মামলার জট দীর্ঘদিনের সমস্যা। নতুন বিচারকরা দায়িত্ব গ্রহণ করলে ন্যায়বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত হবে এবং মামলার জট কমাতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন।
উপসংহার
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে এই নিয়োগ বিচার বিভাগের জন্য একটি বড় পদক্ষেপ। নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত বিচারকরা শুধু আদালতের কার্যক্রম গতিশীল করবেন না, বরং দেশের বিচার ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী ও কার্যকর করতে অবদান রাখবেন।
আরও পড়ুন: লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারে তথ্য দিলেই নগদ পুরস্কার, গোপন থাকবে পরিচয়