বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রায়ই বিভিন্ন দল ও নেতাদের মধ্যে মুখোমুখি পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দেখা যায়। সম্প্রতি এমনই একটি ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণ অঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ একে অপরকে নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন।
বিতর্কের সূচনা
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনের শুনানিকে কেন্দ্র করে। সেখানে বিএনপি ও এনসিপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরপর সংবাদমাধ্যমের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহ অভিযোগ করেন যে, বিএনপির মধ্যে এমন কিছু নেতা আছেন যারা “আওয়ামী লীগ থেকেও বেশি আওয়ামী লীগপন্থী”। সেই তালিকায় তিনি রুমিন ফারহানার নাম উল্লেখ করে বলেন, তিনি আসলে বিএনপির “আওয়ামী লীগবিষয়ক সম্পাদক”।
রুমিন ফারহানার প্রতিক্রিয়া
হাসনাত আব্দুল্লাহর এমন মন্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান রুমিন ফারহানা। সোমবার (২৫ আগস্ট) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তিনি কঠোর ভাষায় প্রতিবাদ করেন। পোস্টে তিনি হাসনাতকে কটূক্তি করার পাশাপাশি তার অতীত রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার নানা ছবি ও প্রমাণ শেয়ার করেন। এই পোস্ট মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় এবং ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়।
হাসনাত আব্দুল্লাহর অভিযোগ
অন্যদিকে, এনসিপির দক্ষিণ অঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ তোলেন। তিনি দাবি করেন, নির্বাচন কমিশনের শুনানিতে বিএনপি যেভাবে এনসিপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে, তা আসলে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের একটি “টেস্ট ম্যাচ”। তার মতে, বিএনপি ভোটকেন্দ্র দখল ও শক্তি প্রদর্শনের কৌশল ইতোমধ্যেই দেখাতে শুরু করেছে।
এছাড়া তিনি আরও বলেন, বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা আসলে আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী। তারা সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেও আবার দলীয় ফোরামে মুখ খুলছেন। রুমিন ফারহানাকে তিনি সেই তালিকার অন্যতম ব্যক্তি হিসেবে উল্লেখ করেন।
সামাজিক প্রতিক্রিয়া
এই পাল্টাপাল্টি বক্তব্যকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল বিতর্ক চলছে। অনেকেই রুমিন ফারহানার ভাষার সমালোচনা করছেন, আবার কেউ কেউ হাসনাত আব্দুল্লাহর মন্তব্যকেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আখ্যায়িত করছেন। সামগ্রিকভাবে বিষয়টি রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
উপসংহার
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিতর্ক ও পারস্পরিক দোষারোপ নতুন কিছু নয়। তবে জাতীয় নির্বাচনের আগে এমন ঘটনা আরও বেশি আলোচিত হয়। রুমিন ফারহানা ও হাসনাত আব্দুল্লাহর সাম্প্রতিক এই বাকযুদ্ধ নিঃসন্দেহে রাজনৈতিক অঙ্গনকে উত্তপ্ত করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের মন্তব্য জনমানসে বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে এবং রাজনৈতিক পরিবেশকে আরও উত্তেজিত করে তুলতে পারে।
আরও পড়ুন: সারজিস আলমের শশুর হাইকোর্টে বিচারক হিসেবে নিয়োগ পেলেন