বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান খাদ্যশস্য আলু। দেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী পর্যন্ত প্রায় সবাই এই পণ্যটির সঙ্গে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে যুক্ত। তবে সাম্প্রতিক সময়ে আলুর বাজারে অস্থিতিশীলতা দেখা দেয়। উৎপাদন খরচের তুলনায় বিক্রয়মূল্য অনেক কমে যাওয়ায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলেন। এ পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
হিমাগারে আলুর সর্বনিম্ন মূল্য নির্ধারণ
২৭ আগস্ট কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, হিমাগারের গেটে আলুর কেজি প্রতি সর্বনিম্ন মূল্য ২২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত আলুর ন্যায্যমূল্য পাবে এবং ক্ষতির ঝুঁকি অনেকটাই কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সরকারের আলু ক্রয় উদ্যোগ
এছাড়াও সরকার ঘোষণা দিয়েছে, ৫০ হাজার মেট্রিক টন আলু সরাসরি ক্রয় করে হিমাগারে সংরক্ষণ করা হবে। পরে অক্টোবর ও নভেম্বর ২০২৫ মাসে এই আলুগুলো বাজারে ছাড়া হবে। এতে বাজারে চাহিদা-সরবরাহের ভারসাম্য রক্ষা পাবে এবং মূল্য স্থিতিশীল থাকবে।
কৃষকের জন্য প্রণোদনা
শুধু আলুর মূল্য নির্ধারণ নয়, কৃষকদের আরও উৎসাহিত করতে সরকার আগামী মৌসুমে আলু চাষিদের প্রণোদনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে কৃষকরা ভবিষ্যতেও আলু উৎপাদনে আগ্রহী হবেন এবং দেশের খাদ্য নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী হবে।
নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণে কমিটি গঠন
আলুর বাজার পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করতে একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিবকে সভাপতি করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগের সচিবদের সদস্য করা হয়েছে। এই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতেই সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়েছে।
কেন এ পদক্ষেপ জরুরি?
বাংলাদেশে আলু শুধু একটি খাদ্যশস্য নয়, এটি কৃষকের জীবিকার অন্যতম প্রধান ভরসা। উৎপাদন খরচের তুলনায় দাম কমে গেলে কৃষকরা উৎপাদন থেকে নিরুৎসাহিত হন, যা ভবিষ্যতে খাদ্য সংকট সৃষ্টি করতে পারে। সরকার যে ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ করেছে, তা কৃষকদের স্বার্থ রক্ষা এবং কৃষি খাতকে টেকসই করার একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ।
উপসংহার
আলুর কেজি প্রতি ২২ টাকা নির্ধারণ এবং ৫০ হাজার টন আলু ক্রয়ের ঘোষণাকে কৃষক ও সাধারণ মানুষের জন্য স্বস্তির খবর বলা যায়। এই উদ্যোগের ফলে কৃষকরা তাদের ন্যায্যমূল্য পাবেন, আবার ভোক্তারাও ভবিষ্যতে সুষম দামে আলু কিনতে পারবেন। সরকারের এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে কৃষি খাতকে আরও শক্তিশালী করবে এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে সহায়ক হবে।
আরও পড়ুন: সারাদেশে বৃষ্টির সম্ভাবনা, তাপমাত্রায় স্থিতিশীলতা: আবহাওয়ার সর্বশেষ পূর্বাভাস