অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনী আবারও হামলার মাত্রা বাড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, প্রতি ৮ থেকে ৯ মিনিট পর পর একের পর এক বিমান হামলা চালানো হচ্ছে। এই ধারাবাহিক হামলার কারণে সাধারণ মানুষের জীবন চরম ঝুঁকিতে পড়েছে। মানবিক সংকট ক্রমশই তীব্র আকার ধারণ করছে।
জাতিসংঘের সতর্কবার্তা
জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় দপ্তর (OCHA) এ পরিস্থিতিকে ভয়াবহ বলে বর্ণনা করেছে। সংস্থাটির মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক নিউইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি সেনারা গাজায় অভিযান জোরদার করেছে। এতে বেসামরিক মানুষের জীবনে সরাসরি প্রভাব পড়ছে।
তিনি আরও বলেন, শুধু বৃহস্পতিবারই উত্তর গাজা থেকে অন্তত ১৬ হাজার ৫০০ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে দক্ষিণে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। যদিও পথে কিছু ত্রাণকর্মী সহযোগিতা করছেন, তবুও তারা নানা প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ছেন।
ফিলিস্তিনিদের দুরবস্থা
এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেও অনেক পরিবার গাজা সিটি ছেড়ে যেতে পারছেন না। তাদের হাতে পর্যাপ্ত অর্থ নেই কিংবা নিরাপদে অন্যত্র যাওয়ার সক্ষমতাও নেই। ফলে তারা বাধ্য হয়ে বোমাবর্ষণের মাঝেই থেকে যাচ্ছেন। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, হাসপাতাল, জরুরি সেবা এবং অনেক মানবিক কার্যক্রম স্থগিত বা স্থানান্তরিত হওয়ায় সাধারণ মানুষের অবস্থা দিন দিন আরও কঠিন হয়ে উঠছে।
জাতিসংঘ মুখপাত্র ডুজারিক জোর দিয়ে বলেন, গাজায় মানবিক কার্যক্রম নির্বিঘ্নে চালানোর জন্য ইসরায়েলকে পূর্ণ সহযোগিতা দিতে হবে। বিশেষ করে খাবার, চিকিৎসা ও আশ্রয়ের মতো মৌলিক চাহিদা মেটাতে আন্তর্জাতিক সহায়তার সুযোগ সৃষ্টি করা জরুরি।
মানবিক সংকটের চিত্র
প্রতিদিনের হামলায় শুধু প্রাণহানিই ঘটছে না, বরং হাজারো পরিবার বাস্তুচ্যুত হচ্ছে। শিশু, নারী ও বয়স্ক মানুষ সবচেয়ে বেশি বিপদের মুখে। ঘরবাড়ি হারিয়ে তারা এখন মানবিক সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ অবস্থায় উদ্বেগ প্রকাশ করলেও স্থায়ী সমাধানের কোনো বাস্তব অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।
উপসংহার
গাজা উপত্যকায় চলমান এই সংঘাত বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে নতুন করে মানবিক সংকটের বার্তা দিচ্ছে। নিয়মিত হামলার ফলে সাধারণ মানুষ কেবল জীবন রক্ষার লড়াই করছেন। জাতিসংঘের আহ্বান সত্ত্বেও যদি সহায়তা পৌঁছাতে না পারে, তবে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।
আরও পড়ুন: যাত্রাবাড়ীতে ভয়াবহ এসি বিস্ফোরণ: একই পরিবারের চারজন দগ্ধ