হ্যানিমানের আবিষ্কৃত —
সিপিয়া ঔষধ মানে—
নীল সমুদ্রে বিচরণ করা কাটেল মাছের পেটে থাকা কালো কালির থলি,
কত মাছ, কত জীবজন্তু চলাফেরা করছে সমুদ্রের জলরাজ্যে, হয় জলের মাঝে বা জলের তলদেশে, তাদের মধ্যে একটি হল কাটেল মাছ,
যা কতকটা শামুকের মতন
শুঁড়যুক্ত একটা সামুদ্রিক মাছ, ( ছবি নীচে দিলাম) ,
এই মাছের পেটের মধ্যে থাকে একটা ছোট বেলুনের মতন পাউচ বা প্যাকেট, আর সেই প্যাকেটে তৈরী হয়ে ভরা থাকে কুচকুচে কালো আলকাতরার মতন রং,
প্রকৃতির কি অপূর্ব সৃষ্টি, চারিদিকের অন্য বড় মাছেরা যেমন তিমি, বা হাঙ্গররা
তাকে যখন খেতে আসে ,
তখন এরা তাদের পেটের ভিতরে থাকা ঐ ব্যাগের কালো রং বাইরে বের করে স্প্রে করার মতন ছিটিয়ে জায়গাটাকে অন্ধকার বা কালো করে দেয়, ফলে শত্রুরা সাময়িক কিছু দেখতে পায় না, আর এরা সেই সুযোগে পালিয়ে যায়।
যখন কালো রং কেমিক্যাল ওয়েতে আবিষ্কার হয়নি ,
তখন আগেকার দিনের আর্টিস্টরা তাদের ছবিতে কালো রং করার জন্য এই মাছের কালিকে ব্যবহার করতো
এই কালো কালিকে শুকিয়ে টাইটুরেশন করে, তারপরে শক্তিকৃত করে হ্যানিম্যান তৈরী করলেন সিপিয়া ঔষধটি,
আর মানব শরীরে প্রুভিং করার পরে যা সিমপটমস পাওয়া গেল, তা হোমিওপ্যাথিতে এক নতুন দিগন্তের মাত্রা এনে দিল।
যাই হোক এই সিপিয়ার চরিত্র মনে রাখা খুবই সহজ,
সিপিয়া মূলত মহিলাদের ঔষধ,
বহু মহিলাদের বিভিন্ন সমস্যায় সিপিয়াই হচ্ছে একমাত্র মারনাস্ত্র —
★ মহিলাদের কখন বা কোন ক্ষেত্রে প্রযোজ্য —–
এককথায়–সব সময় ,
বিয়ের আগে মাসিকের গন্ডগোলে,
বিয়ের পরে মাসিকের গন্ডগোলে,
প্রেগন্যানসীর সময়,
ডেলিভারির পরে,
বাচচা দুধ খাওয়ার সময়,
মাসিক বন্ধের সময়,
—- অর্থাৎ মেয়েদের সব সময়
যে কোন সময় ,
★ চেহারা কেমন হয় সিপিয়া মহিলাদের—
এই সব মহিলাদের চেহারা কতকটা পুরুষালী হয়,
নারীর শরীরের যে সহজাত ও স্বাভাবিক ঢেউ খেলানো ছন্দ, তা এদের মধ্যে বেশ কম থাকে,
গালের দুই পাশে কালো দাগ হওয়ার প্রবনতা থাকে ,
মুখটা একটু হলদেটে -ফ্যাকাশে রংয়ের হতে পারে ,
পেটটা বেশ মোটা থাকে,
দেখলে মনে হয়- পেটে বাচ্চা আছে,
★ মন– উদাসীন, কিছু ভাল লাগে না, কাউকে ভাল লাগে না,
সব সময় মন খারাপ থাকে ,
সব সময় মুখে বিষাদের ছাপ থাকে ,
সহজে কান্না পায়,
একটু লোভী ও কৃপন স্বভাবের , ( লাইকো) ,
কুঁড়ে—- কাজকর্ম করতে চায় না, কিন্তু করতে আরম্ভ করলে বেশ করতে পারে, তখন কোন রকম কষ্টবোধও করে না,
বড্ড ভীত, সন্ত্রস্ত, মানুষের খুব ভয়,
স্মৃতিশক্তির দূর্বলতা,
★ গলায় বা শরীরের অন্য কোথাও বল জাতীয় কিছু অাটকে আছে বলে মনে হয়, ( ল্যাকে) ,
★ পেটের ব্যথা —
পেটের ব্যথা — তা সে মাসিকের সময় হোক, বা অন্য সময় হোক,
সিপিয়ার ব্যথা সবসময় পেটের সামনে থেকে পিছনের দিকে আসে ,
( পিছন থেকে সামনের দিকে — স্যাবাইনা)
( সাইড থেকে সাইডে আসে— সিমিসিফিউগা ) ,
★ খুব শীতকাতুরে,
ঠান্ডা হাওয়া এদের মোটেই সহ্য হয় না,
★সহজে ফিট হয়ে যায়—
সামান্য ঝগড়াঝাঁটির পরে,
সামান্য কান্নাকাটির পরে,
স্বামী সহবাসের পরে,
গাড়ী ঘোঁড়ায় চড়লে,
বেশীক্ষন হাঁটুগেড়ে বসে কোন কাজ করলে পড়ে যেতে পারে ও ফিট হয়ে যেতে পারে,
( যেমন– মন্দিরে বা গীর্জায় প্রার্থনা করে উঠার পরে) ,
★ মাথার চাঁদি প্রায়ই ঠান্ডা থাকে,
( মাথার চাঁদি প্রায়ই গরম থাকে— গ্রাফাই, সালফ) ,
★মাথায় খুব চুল উঠে যায়,
বিশেষ করে বাচ্চা হওয়ার পর থেকে ,
★ মহিলাদের ঔষধ আগেই বলেছি —
তাই সাদা স্রাব তার নিত্য সঙ্গী,
আর মাসিকের সবরকম স্বাধীনতা—
মাসিক কম, মাসিক বেশী,
মাসিকের সময় পেট ব্যথা,
মাসিক প্রত্যেক মাসে নির্দিষ্ট সময়ের আগে হতে পারে ,
মাসিক প্রত্যেক মাসে নির্দিষ্ট সময়ের পরে হতে পারে ,
—– অর্থাৎ মাসিকের যে কোন রকম গন্ডগোল হতে পারে,
নির্দিষ্ট কোন সময়, বা ছন্দ, বা নিয়ম বলে কিছু থাকে না ,
★ দুধ সহ্য হয় না, ( নাইট্রিক এ্যাসিড, নাক্স মশচেটা) ,
দুধ খেলে ডায়েরিয়া হয়,
কিন্তু নর্মালি কনস্টিপেশনে ভোগে,
★ শরীরের এখানে ওখানে হার্পিস জাতীয় চর্মরোগ হতে পারে ,
★ পেটটা খালি খালি লাগে,
এমন কি খাওয়ার পরেও,
(Hydras, Ign, Phos, Sulph) ,
★সকালের দিকে ডিস্পেপশিয়া,
বিশেষ করে বমি বমি ভাব,
প্রেগন্যানসির সময়ের বমিরও একটা ভাল ঔষধ ,
★ প্রস্রাবে খুব দূর্গন্ধ,
( Benj acid, Nit acid, Indium, Viola t) ,
রাতে বাচচারা প্রায়ই বিছানায় প্রস্রাব করে,
★ স্নানে অনিচ্ছা
( কোনি, সোরিনাম , সালফার,)
★ শ্বাসকষ্টের সময় বিছানার শোওয়া থেকে উঠে দাঁড়ালে, বা লাফালাফি করলে একটু আরামবোধ করে,
★★
যে সব সিমপটমস নিয়ে মাথা ঘামাবে না, খুব কাজের কথা নয়—
★ জামা কাপড় আয়রন করার পরে মাথা ব্যথা হয় ,
★ কাপড় চোপড় কাচলে নানান রোগ হয়, ( Washerwomen’s remedy),
★জরায়ু বেরিয়ে গেলে অর্থাৎ প্রোল্যাপসের একটা ভাল ঔষধ,
( কোনদিন ঠিক হয় না),
কারন– স্যাকরো ইউটেরাইন, পিউবো ইউটেরাইন লিগামেন্টসগুলি লুজ হয়ে যায়, লুজ বা ঝুলে পড়া জিনিস কি ঔষধে আবার কপিকলের মতন টেনে তুলতে পারে ?
—- পারে না, পারলে
বৃদ্ধাদের ঝুলে পড়া স্তন, বা বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের বার্ধক্যজনিত ঝুলে পড়া চামড়াও হোমিওপ্যাথিক ঔষধ ঠিক করতে পারতো,
তবে সিমপটোমেটিক বা কনষ্টিটিউশনালি হোমিওপ্যাথিক ঔষধ এই ঝুলে পড়া বা লুজ হওয়া টেন্ডেনসিটাকে হয়ত অনেকটা অাটকাতে পারে, বা
বিলম্বিত করতে পারে,
★ বাচচারা শুধু প্রথম রাতেই বিছানায় প্রস্রাব করে,
( রাতের যে কোন সময় করতে পারে)
সুত্রঃ ইন্টারনেট
Leave a Reply