বরাবরের মতো সানরাইজ৭১ এ সবাইকে স্বাগতম। আশা করছি, প্রত্যেকে ভালো আছেন এবং মন ফ্রেশ আছে। মন ফ্রেশ থাকলেই কিন্তু যেকোন কিছু করতে ভালো লাগে। বিশেষ করে পড়ালেখা।
এই যে আপনি এই ওয়েবসাইটে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা বিষয়ক এই লেখাগুলো পড়ছেন – এটাও কিন্তু এক প্রকার পড়ালেখা।
যাই হোক, আজ আলোচনা করবো আরও তিনটি রোগ নিয়ে; যেগুলো হলো- জরায়ুর স্থানচ্যুতি (Displacement of the Uterus), জরায়ু থেকে রক্তস্রাব (Metrorrhagia) এবং জরায়ুর আনুষঙ্গিক আরও কিছু রোগ নিয়ে।
সময় নিয়ে পুরো পোষ্ট পড়ুন হয়তো উপকারে আসতে পারে।
কারণ ও লক্ষণঃ রোগটাকে অনেকে ‘নাভি টলা’ বলে থাকেন। অর্শ, আঘাত লাগা, বেশি পরিশ্রম করা বা পরিশ্রম একেবারেই না করা, ভারী জিনিষ তোলা, বেশি জোলাপ নেওয়া, অতিরিক্তি মৈথুন প্রভৃতি কারণে রোগটা দেখা দেয়।
জরায়ু স্বস্থানে না থেকে স্থানভ্রষ্ট হয় বলেই একে জরায়ুর স্থানচ্যুতি বা নাভি টলা রোগ বলা হয়। এ রকম হলে পায়খানা ও প্রস্রাব করার সময় কষ্টবোধ হয়।
বস্তিদেশে ভারবোধ হয় ও পিঠে টানবোধ হয়। রোগিনীর সাদা প্রদরও হতে পারে।
আঘাত লাগাজনিত কারণে এ রোগ হলে- আর্নিকা ৩x।
কষ্টকর রজঃস্রাব হলে- বেলেডোনা ৩x।
বেশি রজঃস্রাব ও কনকনানি থাকলে- ক্যালকেরিয়া কার্ব ৬ বা সিমিসিফিউগা ১x।
সাদা প্রদর দেখা দিলে- অ্যাকোনাইট ৬।
কষ্টকর রজঃস্রাব, প্রস্রাবের বেগ ও সাদা প্রদর লক্ষণে- বেলেডোনা ৩x।
এ রোগের শ্রেষ্ঠ ওষুধ- নাক্সভমিকা ৬ ও সিপিয়া ১২। এ দুটির যেকোন একটি ওষুধ সেব্য।
আনুষঙ্গিক চিকিৎসাঃ এ রোগ হলে মাঝে মাঝে গরম পানিতে কাপড় ভিজিয়ে কোমর থেকে পা পর্যন্ত মুছিয়ে দিলে বা ধুয়ে দিলে রোগিনীর পক্ষে উপকার হয়। কোনো কঠিন পরিশ্রমের কাজ ও বেশি নড়াচড়া করা উচিত নয়। রোগীর পায়খানা ও প্রস্রাব ঠিকমতো হচ্ছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখা দরকার।
কারণ ও লক্ষণঃ জরায়ুতে আঘাত লাগলে বা আব হলে সাধারনত এ রকম ঘটে থাকে। হঠাৎ জরায়ু থেকে রক্তস্রাব হতে থাকে। এর সঙ্গে ঋতুর কোনো সম্পর্ক নেই- ঋতুর সময় ছাড়াও এ রোগটা দেখা দিতে পারে। দূর্বলতা, বমি-বমি ভাব, ক্ষুধা কম প্রভৃতি এ রোগের লক্ষণ।
যদি আঘাত লেগে এ রোগ হয় তাহলে রোগিনীকে খাওয়াতে হবে- আর্নিকা ৩x।
কালো রঙের রক্তস্রাব হলে- হ্যামামেলিস ৩x।
উজ্জল লাল রঙের রক্তস্রাব হলে- স্যাবাইনা ৩x।
প্রসবের পরে এ ধরনের রক্তস্রাব হলে- সিকেলি ৩।
রক্তস্রাব যদি কালো সুতার মতো সরু আকারে হয় তাহলে দিতে হবে- স্যাটাইভা ৩০।
রোগটা যদি পুরাতন হয় তাহলে দিতে হবে- সালফার ৩০।
এ রোগের উৎকৃষ্ট ওষুধ হিসেবে বিভিন্ন সময় ব্যবহার করা হয় সাধারনত- হাইড্রাস্টিস ১x।
আনুষঙ্গিক চিকিৎসাঃ এ রোগ হলে কোনো পরিশ্রমের কাজ, ভারী বস্তু তোলা বা নামানো, বেশি হাটা-চলা প্রভৃতি বন্ধ করতে হবে।
নারীর জরায়ুতে নানা রকমের রোগ দেখা দিতে পারে। এসব রোগকে বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখা উচিত নয়। রোগটা হয়েছে জানতে পারার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা করানো দরকার।
প্রথম অবস্থায় চিকিৎসা করালে রোগটা অল্পতেই সেরে যায়, রোগিনীও কষ্ট থেকে অব্যাহতি পায়।
জরায়ুতে বেদনার ক্ষেত্রে- ম্যাগ্নেশিয়া মিউরেটিকা ৬, সিমিসিফিউগা ৩x। যেকোন একটি ওষুধ সেব্য।
জরায়ুতে রক্ত সঞ্চয় এর ক্ষেত্রে- কার্বোভেজ ৩০, ক্যালক্যারিয়া কার্ব ৬। যেকোন একটি ওষুধ সেব্য।
জরায়ু ফুলে ওঠার ক্ষেত্রে- সিপিয়া ৬, অরাম-মিউর ৩x চূর্ণ। যেকোন একটি ওষুধ সেব্য।
জরায়ু থেকে রক্তস্রাব এর ক্ষেত্রে- ইপিকাক ৩x, হ্যামামেলিস ১x। যেকোন একটি ওষুধ সেব্য। [স্বাভাবিক রজঃস্রাব নাকি রোগ-ঘটিত রজঃস্রাব তা ভালো করে পরীক্ষা করে তবে ওষুধ দেওয়া উচিত।]
জরায়ুতে বায়ু সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে- লাইকোপোডিয়াম ১২, বেলেডোনা ৩x। যেকোন একটি ওষুধ সেব্য।
জরায়ুতে পানি সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে- ক্যালকেরিয়া কার্ব ৬, কার্বোভেজ ৩০। যেকোন একটি ওষুধ সেব্য।
জরায়ুতে পঁচন এর ক্ষেত্রে- ক্রিয়োজোট ৬, আর্সেনিক ৬, সিকেলি ৬-৩০, কার্বোভেজ ৬-৩০। যেকোন একটি ওষুধ সেব্য।
আজকের আলোচনা এখানেই শেষ করলাম। আশা করি, বুঝতে পেরেছেন। নতুন কোনো স্বাস্থ্য টিপস নিয়ে হাজির হবো অন্য দিন। সবাই সুস্থ্য, সুন্দর ও ভালো থাকুন। নিজের প্রতি যত্নবান হউন এবং সাবধানে থাকুন।
এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লাগে এবং প্রয়োজনীয় মনে হয় তবে অনুগ্রহ করে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না যেন।
[বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যগুলো কেবল স্বাস্থ্য সেবা সম্বন্ধে জ্ঞান আহরণের জন্য। অনুগ্রহ করে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করুন। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবনে আপনার শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি হতে পারে। প্রয়োজনে, আমাদের সহযোগিতা নিন। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।]
Leave a Reply