করোনা ভাইরাস এখন এক আতঙ্কের নাম। কে কখন কিভাবে আক্রান্ত হতে পারে তা কেউ জানে না। শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত যে কেউ এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। এখন পর্যন্ত তেমন কোনো ওষুধও আবিষ্কার হয়নি। সচরাচর ব্যবহৃত ওষুধগুলো দিয়েই আপাতত প্রত্যেকটি দেশ চিকিৎসার কাজ চালাচ্ছে। লকডাউন নামক সিস্টেমের আওতায় মানুষ বিপর্যস্ত। কতোদিন আর এভাবে থাকতে হবে। মানুষ হাপিয়ে উঠছে।
যাইহোক, এমন একটা পরিস্থিতিতে পরিবারের কেউ যদি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয় তবে আপনার অনেক কিছুই করার আছে। আক্রান্ত মানুষটিকে ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া কোনো সমাধান নয়। সত্যিই যদি এমন হয় তবে কি করবেন তা এই পোষ্টে তুলে ধরা হবে।
সংক্রমিত ব্যক্তিকে প্রথমেই সবার থেকে আলাদা করে ফেলতে হবে। আলাদা ঘরের ব্যবস্থা অবশ্যই করতে হবে। যতো নিয়ম-কানুনই মানা হোক না কেন, একই ঘরে থাকাটা কখনোই নিরাপদ নয়। আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য আলাদা বাথরুমের ব্যবস্থা করতে হবে। যদি সেটা ঘরের সাথে লাগালাগি অবস্থায় হয় তাহলে সবচেয়ে ভালো হয়। আর যদি এটা সম্ভব না হয় তবে আক্রান্ত ব্যক্তি বাথরুম ব্যবহারের সাথে সাথে বাথরুম জীবানুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে বিশেষ করে দরজার হাতল, কল, দরজা, বদনা ইত্যাদি।
যদি কেউ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয় তবে নিজে থেকেই সেই ব্যক্তির সচেতন হওয়া উচিত। পরিবারের ন্যূনতম একজন ব্যক্তির উচিত ঐ আক্রান্ত ব্যক্তির সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর নেওয়া। আক্রান্ত ব্যক্তি যাতে রান্নাঘরে না ঢোকে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির জিনিষপত্র আক্রান্ত ব্যক্তিরই পরিষ্কার করা উচিত। পরিস্থিতি বিশেষে যদি সেটা সম্ভব না হয় তাহলে আপনাকে বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে।
যদি সত্যিই আলাদা ঘর না থাকে তবে একই ঘরে থাকতে হবে। কিন্তু সেক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী চিকিৎসক’রা যে মাস্ক ব্যবহার করেন পারলে সেই ধরনের মাস্ক ব্যবহার করতে হবে সবাইকে। কিছু বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দিয়েছেন, আক্রান্ত ব্যক্তিকে অবশ্যই এমন ঘরে রাখতে হবে যে ঘরে পর্যাপ্ত আলো বাতাস ঢোকে। ২৪ ঘন্টাই যেনও একজন টেক কেয়ার থাকে যাতে রোগীর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে পারে এবং প্রয়োজনে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে পরিবারে কয়েকজন সদস্য থাকলে সময়টা ভাগ করে নিয়ে এই কাজ করতে পারেন।
ক) রোগীর কাছে যাওয়ার সময় অবশ্যই মাস্ক ও গ্লাভস পড়ার সঙ্গে সঙ্গে অবশ্যই সবরকম সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
খ) বাচ্চারা, বয়স্করা এবং শারিরীকভাবে দূর্বল ব্যক্তিরা যেনও এমন ব্যক্তির সন্নিকটে না যান সেদিকে অবশ্যই নজর রাখাটা খুব জরুরী।
১। বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী যদি কারও হালকা জ্বর থাকে তবে কমপক্ষে ১০ দিন আলাদা থাকতে হবে। আর যদি আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে রোগের লক্ষণ থাকে তবে ১৭ দিন পর্যন্ত আইসোলেশনে থাকাটা জরুরী।
২। সংক্রমিত ব্যক্তির মধ্যে যদি সর্দি-কাশির লক্ষণ থাকে তবে বারবার সাবান পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে এবং প্রয়োজনে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে।
১। সব সময় বাড়িতেই থাকুন। স্কুল, কলেজ ও পাবলিক প্লেসগুলোতে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন অর্থাৎ প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে যাবেন না।
২। আরামে থাকুন। নিয়মিত ব্যয়াম করুন। পুষ্টিকর খাবার খান। বেশি করে পানি পান করুন।
৩। করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে সব সময় মাস্ক ব্যবহার করুন। হাঁচি কাশি দেয়ার সময় নাক মুখ ঢেকে রাখুন। প্রয়োজনে ডিস্পোজাল টিস্যু ব্যবহার করুন। ব্যবহারের পর তা মাটিতে পুতে ফেলুন বা পুড়িয়ে ফেলুন।
সবশেষ কথা হচ্ছে, এটা একটা ভাইরাস। খুবই ছোয়াচে এই ভাইরাস। এই ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে দূরত্ব সৃষ্টি করছে। কবে এই মহামারী শেষ হবে তা আল্লাহই ভালো জানেন। আসুন, আমরা সবাই সাবধানে থাকি, সতর্ক থাকি, স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলি। নিজে ভালো থাকি এবং আশপাশের সবাইকে ভালো রাখি।
করোনা ভাইরাস নিয়ে আরও পড়ুন: এখানে
[বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যগুলো কেবল হোমিওপ্যাথি সম্বন্ধে জ্ঞান আহরণের জন্য। অনুগ্রহ করে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করুন। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবনে আপনার শারিরীক বা মানসিক ক্ষতি হতে পারে। প্রয়োজনে, আমাদের সহযোগীতা নিন। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।]
Leave a Reply