রাজধানীর দিয়াবাড়ীতে বিমান বিধ্বস্ত, ব্যাপক প্রাণহানি
গতকাল সোমবার (২১ জুলাই) রাজধানীর দিয়াবাড়ী এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ভয়াবহ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২০ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও, আহতদের সংখ্যা ১৭১ জন বলে সামরিক সংস্থা আইএসপিআর নিশ্চিত করেছে।
দুর্ঘটনার বিস্তারিত
বিকেল ৫টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বিমানটি আকাশে ওঠার কিছুক্ষণ পরই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে স্কুল প্রাঙ্গণে আছড়ে পড়ে। বিমানের ধ্বংসাবশেষ ও আগুনের লেলিহান শিখা আশেপাশের বাড়ি-ঘর ও পথচারীদের ক্ষতিগ্রস্ত করে। ঘটনাস্থলেই বেশ কয়েকজন নিহত হন, আর গুরুতর আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়।
নিহত ও আহতদের তালিকা
আইএসপিআরের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, নিম্নোক্ত হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে:
-
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট: ২ জন
-
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল: ১ জন
-
ঢাকা সিএমএইচ: ১২ জন
-
কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল: ২ জন
-
উত্তরার লুবনা জেনারেল হাসপাতাল: ২ জন
-
উত্তরা আধুনিক হাসপাতাল: ১ জন
এছাড়াও, বর্তমানে ১৭১ জন আহত রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন:
-
কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল: ৮ জন
-
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট: ৭০ জন
-
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল: ৩ জন
-
ঢাকা সিএমএইচ: ১৭ জন
-
কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল: ১ জন
-
উত্তরার লুবনা জেনারেল হাসপাতাল: ১১ জন
-
উত্তরা আধুনিক হাসপাতাল: ৬০ জন
-
উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতাল: ১ জন
প্রতিক্রিয়া ও তদন্ত
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় জাতীয় পর্যায়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন।
বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ও সরকার ঘটনার কারণ তদন্তের জন্য একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বিমানের কারিগরি ত্রুটিই এ দুর্ঘটনার মূল কারণ হতে পারে।
সতর্কতা ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ
এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে বিমান চলাচল নিয়ম আরও কঠোর করা এবং নিয়মিত বিমানের রক্ষণাবেক্ষণ পরীক্ষা করার প্রয়োজনীয়তা উঠে এসেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রশিক্ষণ বিমানগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা জরুরি।
সহায়তা ও রক্তদান
এই বিপর্যয় মোকাবিলায় স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে রক্তের চাহিদা বেড়েছে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো আহতদের জন্য রক্তদান ও অন্যান্য সহায়তা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষও এগিয়ে এসে রক্তদান ও আর্থিক সাহায্য দিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
শেষ কথা
এই দুর্ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। মৃতদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। আশা করি, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনা: শিশুদের জীবন সংকটে, বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা
আপনার মতামত জানান: এই ঘটনা নিয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কি? নিচের কমেন্ট বক্সে শেয়ার করুন।
#বিমান_দুর্ঘটনা #ঢাকা #Bangladesh #আইএসপিআর #শোক