সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি গুজব ছড়িয়ে পড়েছে—”১ আগস্ট ২০২৫ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শনিবারেও খোলা থাকবে এবং সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা হয়েছে।” এই দাবিটি মুহূর্তেই অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করে।
তবে, এই তথ্যটি সম্পূর্ণ ভুয়া এবং বিভ্রান্তিকর, যা সরকারিভাবে নিশ্চিতভাবে অস্বীকার করা হয়েছে।
আসলে কী ঘটেছে?
রিউমর স্ক্যানার নামক একটি তথ্য যাচাইকারী প্ল্যাটফর্মের অনুসন্ধান অনুযায়ী:
-
এই বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা মাউশি কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
-
সরকারি কোনো ওয়েবসাইটে, সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কিংবা বিশ্বস্ত সংবাদমাধ্যমে এই সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
-
গত ৭ মে একটি সংবাদে দেখা যায়, ঈদের আগের দুই শনিবার (১৭ ও ২৪ মে) বিশেষভাবে স্কুল খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, কারণ ১১ ও ১২ জুন নির্বাহী আদেশে ছুটি ছিল। এটি ছিল সাময়িক ব্যবস্থা এবং এর সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি কোনো সিদ্ধান্তের সম্পর্ক নেই।
কী বলছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা?
-
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা সিরাজ-উদ-দৌলা খান বলেন,
“আমার জানা মতে এ রকম কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।”
-
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক নুরুল হক সিকদার জানান,
“আমি ফেসবুকে বিষয়টি দেখেছি। তবে আমাদের কাছে এমন কোনো নির্দেশনা আসেনি।”
এই বক্তব্যগুলো থেকে স্পষ্ট যে, শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি অব্যাহত রয়েছে এবং ভবিষ্যতে যদি এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তা হবে সরকারি নোটিশ এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত।
গুজব থেকে সাবধান থাকুন
বর্তমানে প্রযুক্তির যুগে তথ্য ছড়াতে সময় লাগে না। কিন্তু সেটি সত্য না হলে ক্ষতি হয় সমাজের, শিক্ষার এবং আমাদের মানসিক স্থিতিরও। তাই:
সত্য যাচাইয়ের জন্য করণীয়:
-
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট: moedu.gov.bd
-
মাউশির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট: dshe.gov.bd
-
সরকারি নোটিশ ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ পড়ুন
-
সন্দেহজনক তথ্য শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন
উপসংহার
বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি এখনো বহাল রয়েছে। যেকোনো পরিবর্তনের বিষয়ে সরকার নিজ উদ্যোগে ঘোষণা দেবে। তাই গুজবে কান না দিয়ে সচেতন হোন, যাচাই করে তবেই তথ্য শেয়ার করুন।
আপনার বন্ধু, সহকর্মী বা পরিবারকে এই তথ্য জানান। বিভ্রান্তি নয়—সঠিক তথ্যই হোক আপনার সচেতনতার হাতিয়ার।
আরও পড়ুন: প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের জন্য আনন্দঘন খবর: দশম গ্রেড বেতন শীঘ্রই!