পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) মুসলিম উম্মাহর কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি দিন। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (দ.)-এর জন্ম ও ওফাত দিবস ১২ রবিউল আউয়াল উপলক্ষে প্রতিবছরের মতো এবারও রাজধানী ঢাকায় জাঁকজমকপূর্ণ জশনে জুলুস শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে শুরু হওয়া এ মহাসমাবেশে লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লি অংশ নেন।
রাজধানীতে শোভাযাত্রার জাঁকজমক আয়োজন
শনিবার সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পশ্চিম প্রান্ত থেকে বিশাল শোভাযাত্রাটি বের হয়। জশনে জুলুসটি দোয়েল চত্বর, শিক্ষা ভবন এবং কদম ফোয়ারা সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় উদ্যানে ফিরে আসে। দিনব্যাপী এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা লক্ষাধিক নবীপ্রেমী সুফিবাদী জনতা।
শোভাযাত্রার প্রথম সারিতে বড় অক্ষরে লেখা ছিল – “ইয়া নবী সালামু আলাইকা” এবং “ইয়া রাসূল সালামু আলাইকা”। অংশগ্রহণকারীদের হাতে ছিল কালেমা খচিত পতাকা, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড। বিশাল জাতীয় পতাকা নিয়ে রাজধানীর রাস্তাঘাট মুখরিত হয়ে ওঠে। চারদিকে ধ্বনিত হতে থাকে নারায়ে তাকবীর ও নারায়ে রিসালত এর ধ্বনি।
শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা সাদা পোশাক ও টুপি পরে এক অনন্য দৃশ্য সৃষ্টি করেন। বিশেষ করে নারীদের অংশগ্রহণ এ বছরের শোভাযাত্রাকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে।
শান্তি মহাসমাবেশ
শোভাযাত্রা শেষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হয় শান্তি মহাসমাবেশ। এতে সভাপতিত্ব করেন আঞ্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়া ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান শাহসূফী ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন,
“মহানবী হযরত মুহাম্মদ (দ.) সমগ্র মানবজাতির জন্য আল্লাহর রহমত। তার শিক্ষা অনুসরণ করলে পৃথিবীতে শান্তি, ন্যায়বিচার ও মানবিকতার সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, আজ বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ-বিগ্রহ ও সন্ত্রাস মানবতাকে বিপন্ন করছে। স্থায়ী শান্তির একমাত্র পথ হলো নবীজির আদর্শকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বাস্তবায়ন করা। ব্যক্তি থেকে শুরু করে পরিবার ও রাষ্ট্রীয় জীবনে ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.)-এর বার্তা ধারণ করতে পারলেই সমাজে ভ্রাতৃত্ব, সম্প্রীতি ও মানবিকতার আলো ছড়িয়ে পড়বে।
ঈদে মিলাদুন্নবীর তাৎপর্য
ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) শুধু একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং এটি মুসলিম সমাজে ভ্রাতৃত্ব, ঐক্য ও কল্যাণের প্রতীক। নবীজির শিক্ষা মানবিকতা, সহনশীলতা ও শান্তির বার্তা দেয়। এদিনকে কেন্দ্র করে আয়োজিত জশনে জুলুস শোভাযাত্রা মুসলমানদের মধ্যে নবীপ্রেম ও ঈমানি শক্তিকে আরও দৃঢ় করে।
আরও পড়ুন: ঈদে মিলাদুন্নবী: ইসলামের আলোকে এর তাৎপর্য, ইবাদত ও পালনীয় বিষয়