জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের নতুন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ভয়াবহ এক তথ্য—ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার কারণে গাজায় প্রতিদিন গড়ে ২৮টি শিশু প্রাণ হারাচ্ছে। বোমাবর্ষণ, খাদ্য ও চিকিৎসা সংকট, এবং মানবিক সহায়তা বন্ধ করে দেওয়ার ফলে গাজার শিশুরা চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।
ইউনিসেফের প্রতিবেদন: শিশু মৃত্যুর ভয়াবহ চিত্র
ইউনিসেফের মতে, গাজার শিশুদের মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো:
-
বোমা হামলা ও সহিংসতা
-
অপুষ্টি ও অনাহার
-
জরুরি চিকিৎসা সহায়তার অভাব
সংস্থাটি জানিয়েছে, প্রতিদিন এত শিশু মারা যাচ্ছে, যা একটি স্কুলের পুরো একটি ক্লাসরুমের সমান। ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলি আক্রমণ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৮ হাজারেরও বেশি শিশু নিহত হয়েছে, যা প্রতি ঘণ্টায় একজন শিশুর মৃত্যুর সমতুল্য।
গাজার শিশুদের মানবিক সংকট: খাদ্য, পানি ও ওষুধের তীব্র অভাব
গাজার শিশুদের বেঁচে থাকার জন্য জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজন:
✔ পর্যাপ্ত খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি
✔ জীবনরক্ষাকারী ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম
✔ নিরাপদ আশ্রয় ও মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা
ইউনিসেফ সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, যুদ্ধবিরতি ছাড়া গাজার শিশুদের রক্ষা করা সম্ভব নয়।
শিশুদের জন্য গাজা এখন ‘কবরস্থান’
সেভ দ্য চিলড্রেনের আঞ্চলিক পরিচালক আহমাদ আলহেনদাওয়ি বলেছেন, “গাজা এখন শিশুদের জন্য একটি কবরস্থানে পরিণত হয়েছে।” তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, “শিশুরা তাদের স্বপ্ন দেখার সাহস হারিয়ে ফেলছে। তারা বিশ্বাস করতে শুরু করেছে যে, বিশ্ব তাদের ভুলে গেছে।”
মানসিক আঘাত: শিশুদের উপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব
ইসরায়েলের হামলা শুধু শারীরিক ক্ষতি করছে না, শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যও ধ্বংস করে দিচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, ১০ বছর বয়সী লানা নামের এক শিশুর চুল ও ত্বক সাদা হয়ে গেছে। চিকিৎসকরা বলছেন, এটি ট্রমা-ইনডিউসড ডিপিগমেন্টেশন নামক একটি অবস্থা, যা অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে ত্বকের রং পরিবর্তন করে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন
গাজার শিশুদের রক্ষা করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে:
🔹 যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা
🔹 মানবিক সহায়তা অবিলম্বে পৌঁছে দেওয়া
🔹 যুদ্ধাপরাধের জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা
শেষ কথা: শিশুদের বাঁচাতে আমাদের সচেতনতা ও সহায়তা জরুরি
গাজার শিশুরা প্রতিদিন মৃত্যুর মুখোমুখি হচ্ছে। তাদের বাঁচাতে আমাদের সকলের সচেতনতা, কণ্ঠস্বর ও সমর্থন প্রয়োজন। বিশ্বকে অবশ্যই এই সংকটের সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে, নইলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমরা অপরাধী হয়ে থাকব।
আরও পড়ুন: জাবিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি
📌 এই সংকট সম্পর্কে আরও জানতে এবং সাহায্য করতে ইউনিসেফ, রেড ক্রিসেন্ট ও অন্যান্য বিশ্বস্ত মানবিক সংস্থার সাথে যোগ দিন।
#গাজা #শিশু_মৃত্যু #ইউনিসেফ #মানবিক_সংকট #যুদ্ধবিরতি_চাই