বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম বড় দুর্নীতির মামলায় আদালতের কড়া নির্দেশ
ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের একটি গেজেটে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা ও পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়সহ মোট ১০০ জনকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে সরকারি প্লট বরাদ্দে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের অভিযোগে দায়ের করা ছয়টি মামলার প্রেক্ষিতে এই আদেশ জারি করা হয়েছে।
গেজেটে কী বলা হয়েছে?
৩ জুলাই প্রকাশিত আদালতের গেজেটে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামিরা গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপন করে রয়েছেন। ১৯৫৮ সালের ক্রিমিনাল ল অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্টের ৬(১৩) ধারা অনুযায়ী, তাদেরকে নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে আদালতে হাজির হতে হবে। অন্যথায়, তাদের অনুপস্থিতিতে বিচার কার্যক্রম চলবে।
মামলাগুলোর পরবর্তী শুনানি ২০ জুলাই তারিখে নির্ধারিত হয়েছে। দুদকের প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার পটভূমি
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পূর্বাচল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে গত জানুয়ারিতে ছয়টি মামলা দায়ের করে। এতে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, টিউলিপ সিদ্দিক, পুতুল ও আজমিনা সিদ্দিকসহ মোট ১০০ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার মূল অভিযোগ
-
সরকারি প্লট বরাদ্দে স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতি।
-
ক্ষমতার অপব্যবহার করে অযৌক্তিকভাবে প্লট বণ্টন।
-
প্রক্রিয়াগত ত্রুটি ও আইন লঙ্ঘনের মাধ্যমে সুবিধাভোগী তৈরি।
তদন্ত ও চার্জশিট জমা
দুদকের তদন্তকারীরা মামলাগুলোতে প্রাথমিক তদন্ত শেষে ১০ মার্চ চার্জশিট জমা দেন। বিভিন্ন মামলায় নতুন আসামি যুক্ত হওয়ায় চার্জশিটে মোট আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ১০০ জন।
আদালতের কঠোর অবস্থান
আদালতের এই নির্দেশনা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, মামলাগুলো দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে চলবে। আসামিরা যদি আদালতে হাজির না হন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে জড়িত থাকা অভিযোগ অনুপস্থিতিতে বিচার করা হতে পারে।
জনপ্রতিক্রিয়া ও রাজনৈতিক প্রভাব
এই মামলাগুলো দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে বিতর্ক চলছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে এই কেলেঙ্কারি নিয়ে ক্ষোভ ও জবাবদিহির দাবি জোরালো হচ্ছে।
পরবর্তী পদক্ষেপ
২০ জুলাইয়ের শুনানিতে আসামিদের উপস্থিতি এই মামলার গতিপথ নির্ধারণ করবে। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মামলা বাংলাদেশের দুর্নীতি ও সুশাসনের ইতিহাসে একটি মাইলফলক হতে পারে।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে নৃশংস ঘটনা: শিশুর গলায় ছুরি ধরে মাকে ধর্ষণের অভিযোগ
আপনার মতামত জানান: এই মামলার প্রক্রিয়া ও ফলাফল নিয়ে আপনি কী ভাবছেন? নিচে কমেন্ট করে শেয়ার করুন।