ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণের মর্মান্তিক অভিযোগ উঠেছে। র্যাবের একটি বিশেষ অভিযানে ধর্ষণ মামলায় মাদ্রাসা শিক্ষক গ্রেফতার [প্রধান আসামি মাওলানা মো. আবরারুল হক (৩৫)] হয়েছেন। নরসিংদীর রায়পুরা থেকে তাকে আটক করা হয়।
ঘটনার বিস্তারিত
মামলার এজাহার অনুযায়ী, গত ২১ এপ্রিল আবরারুল হক ঈশ্বরগঞ্জের নওপাড়া জামিয়া রাশিদিয়া মহিলা মাদ্রাসার এক ছাত্রীকে বিয়ের লোভ দেখিয়ে অপহরণ করেন। তাকে গাজীপুরের শ্রীপুর মাওনা এলাকায় নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হয়। দুই দিন পর ওই ছাত্রীকে তার বাড়ির কাছে ফেলে রেখে চলে যান অভিযুক্ত।
পরবর্তীতে ছাত্রীটি তার পরিবারকে ঘটনাটি জানায়। এরপর তার বাবা স্থানীয় থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। তিন মাস ধরে পুলিশ ও র্যাবের তৎপরতার পর গোপন সূত্রের ভিত্তিতে নরসিংদীর রায়পুরা থেকে আবরারুল হককে আটক করা হয়।
আসামির পরিচয় ও গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া
গ্রেপ্তার হওয়া আবরারুল হক ঈশ্বরগঞ্জের মগটুলা ইউনিয়নের নওপাড়া গ্রামের মৃত আনছার আলীর ছেলে। মামলা দায়ের হওয়ার পর থেকে তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে ছিলেন। র্যাব-১৪ ময়মনসিংহ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সামসুজ্জামান জানান, অভিযুক্তের গোপন অবস্থান সম্পর্কে তথ্য পেয়ে তাকে আটক করা হয়।
আদালতে হাজির ও কারাগারে প্রেরণ
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উবায়দুর রহমান বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আবরারুল হককে শুক্রবার ময়মনসিংহের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি
এ ধরনের ঘটনা সমাজে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্রুত পদক্ষেপ ও বিচারিক প্রক্রিয়া আশা জাগিয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতনের মতো জঘন্য অপরাধের দ্রুত বিচার ও কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা।
সতর্কতা ও সচেতনতা
এ ধরনের ঘটনা এড়াতে অভিভাবকদের সচেতনতা জরুরি। বিয়ের প্রলোভন বা অন্য কোনো অজুহাতে অপরিচিত কারো সঙ্গে যাওয়া থেকে সতর্ক থাকতে হবে। কোনো সন্দেহজনক পরিস্থিতি দেখা দিলে স্থানীয় প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নেওয়া উচিত।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় স্থানগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করার পাশাপাশি সমাজের সকল স্তরে নৈতিক শিক্ষার প্রসার ঘটানো এখন সময়ের দাবি। এসব বিষয়ে মাদ্রাসা শিক্ষক গ্রেফতার বিষয়টাও খুবই লজ্জার!
আরও পড়ুন: জামায়াত আমীর ডা. শফিকুর রহমানের সফল বাইপাস সার্জারি: স্বাস্থ্যবিষয়ক আপডেট