গোটা দেশ শোকের আবেগে আচ্ছন্ন। রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমান বিধ্বস্তের মর্মান্তিক ঘটনায় স্তব্ধ বাংলাদেশ। স্বাধীনতার পর এমন ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা আর দেখা যায়নি। সোমবার দুপুরে ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩১ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়েছে, যার মধ্যে ২৫ জনই কোমলমতি শিশু। আহতদের মধ্যে অনেকেই রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এই ঘটনা শুধু শোকই নয়, গভীর মানসিক আঘাত দিয়েছে অসংখ্য মানুষকে। অনেকেই এই ট্র্যাজেডি সামলাতে পারছেন না, মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। এমনই একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী পরীমণি, যিনি এই ঘটনার পর প্যানিক অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
পরীমণির প্যানিক অ্যাটাক: কী ঘটেছে?
গতকালের ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার পর থেকে পরীমণি মানসিকভাবে অস্থির হয়ে পড়েন। ঘটনার ভিডিও এবং ছবি দেখে তার মধ্যে তীব্র উদ্বেগ ও আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। রাতে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতাল থেকে দেওয়া এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে পরীমণি তার অনুভূতি প্রকাশ করেছেন। তিনি লিখেছেন, “আমার ছোটবেলা থেকেই আগুন নিয়ে একটা ট্রমা আছে। কিন্তু সেটা যে এত ভয়াবহ রূপ নেবে, তা আগে বুঝিনি। গতকালের দুর্ঘটনায় ছোট ছোট বাচ্চাদের পোড়া শরীরের ছবি দেখে আমার প্রচণ্ড প্যানিক অ্যাটাক হয়! বুকের ভেতর ধড়ফড় করতে থাকে, শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। শেষ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হতে হলো। আল্লাহ, ওই মায়েরা কীভাবে এই শোক সামলাবে? আল্লাহ তাদের সহ্য করার শক্তি দিন…”
পরীমণির ভক্তদের উদ্বেগ ও শুভকামনা
পরীমণির অসুস্থতার খবর জানার পর তার অসংখ্য ভক্ত ও সহকর্মী উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বর্তমানে দুই সন্তানের মা পরীমণি শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ হয়ে উঠবেন—এটাই কামনা করছেন সবাই।
ট্রমা ও প্যানিক অ্যাটাক: কীভাবে সামলাবেন?
উত্তরার মতো ভয়াবহ ঘটনা যে কাউকেই মানসিকভাবে আঘাত করতে পারে। বিশেষ করে যাদের আগে থেকে ট্রমা বা ফোবিয়া রয়েছে, তাদের জন্য এটি আরও কঠিন। প্যানিক অ্যাটাকের সময় শ্বাস নিতে কষ্ট, বুক ধড়ফড়, মাথা ঘোরা বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে যা করবেন:
-
শান্ত থাকার চেষ্টা করুন – গভীর শ্বাস নিন, ধীরে ধীরে নিঃশ্বাস ছাড়ুন।
-
নিরাপদ স্থানে যান – বসে বা শুয়ে পড়ুন, চোখ বন্ধ করে মনকে শান্ত করতে চেষ্টা করুন।
-
কাছের কাউকে জানান – পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলুন, মানসিক সমর্থন নিন।
-
প্রফেশনাল হেল্প নিন – যদি বারবার প্যানিক অ্যাটাক হয়, মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
শেষ কথা
উত্তরার এই মর্মান্তিক ঘটনা আমাদের সবার হৃদয়কে দগ্ধ করেছে। পরীমণির মতো অনেকেই এই শোক ও ট্রমা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন। এ সময় একে অপরের পাশে দাঁড়ানো, মানসিক সমর্থন দেওয়া এবং প্রার্থনা করাই একমাত্র ভরসা।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে ধৈর্য্য দান করুন, মৃতদের রুহের মাগফিরাত দান করুন এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা দান করুন। আমীন।
আরও পড়ুন: মাইলস্টোন কলেজ ট্র্যাজেডি: শোক ও ট্রমা মোকাবিলার গাইডলাইন
#উত্তরা_বিমান_দুর্ঘটনা #পরীমণি #প্যানিক_অ্যাটাক #শোক