রাজধানী ঢাকার বংশাল এলাকায় এক নারীর সঙ্গে ভয়াবহ প্রতারণা ও নির্যাতনের অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযোগ উঠেছে, বাসায় কাজের প্রস্তাব দিয়ে এক নারীকে ফাঁদে ফেলে তাকে ধর্ষণ, ভিডিও ধারণ এবং পরে সেই ভিডিও দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে সোমবার রাতে সূত্রাপুর ও কোতয়ালী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তদের আটক করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের পরিচয়
গ্রেফতার হওয়া তিন ব্যক্তি হলেন:
-
মো. রাশেদুজ্জামান (৪২)
-
আলমগীর হোসেন (৬৫)
-
আব্দুল জলিল (৬৯)
ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, দেড় বছর আগে ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে মো. রাশেদুজ্জামানের পরিচয় হয়। পরবর্তীতে তিনি তাকে বাসায় কাজের জন্য প্রস্তাব দেন। প্রথমে রাজি না হলেও একপর্যায়ে ওই নারী কাজ শুরু করেন।
কীভাবে ঘটেছিল নির্মমতা
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি বংশালের সাতরওজা এলাকায় নিজের বাসায় ওই নারীকে জোর করে ধর্ষণ করেন রাশেদুজ্জামান। এরপর তিনি সেই ঘটনার ভিডিও ধারণ করেন। পরে ভিডিও দেখিয়ে ভয় দেখিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে বাধ্য করেন এবং প্রতিবার ভিডিও ধারণ করেন।
এই ভিডিওর মাধ্যমে ওই নারীকে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ দাবি করা হয়। যখন ভুক্তভোগী টাকা দিতে অস্বীকার করেন, তখন রাশেদুজ্জামান ভিডিওটি গ্রিসপ্রবাসী এক আত্মীয়ের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দেন।
পুলিশের তৎপরতা ও স্বীকারোক্তি
মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশের একটি বিশেষ দল প্রযুক্তির সহায়তায় ৪ আগস্ট রাত ১টা ৪৫ মিনিটে সূত্রাপুর থানাধীন রায়সাহেব বাজার এলাকা থেকে রাশেদুজ্জামান ও আলমগীর হোসেনকে এবং রাত ২টা ১০ মিনিটে কোতয়ালী থানাধীন পপুলার হাসপাতালের সামনে থেকে আব্দুল জলিলকে গ্রেফতার করে।
তিনজন আসামিই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মামলার অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান এখনো চলমান রয়েছে।
সতর্কবার্তা ও সামাজিক বার্তা
এই ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, সমাজে নারীদের প্রতি সহিংসতা এখনো একটি বড় চ্যালেঞ্জ। প্রতারণামূলকভাবে নারীদের বিশ্বাস অর্জন করে তাদের সম্মানহানি করার মতো অপরাধ কঠোরভাবে দমন করা উচিত। আইনের সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে এমন ঘটনা প্রতিরোধে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
আরও পড়ুন: গাজায় শিশুদের উপর ইসরায়েলের নির্মম হামলা: প্রতিদিন ২৮ শিশু প্রাণ হারাচ্ছে