বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে সুপরিচিত গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতা নুরুল হক নুর বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রয়েছেন। তার সুচিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন নুরুল হক নুরের স্ত্রী মারিয়া আক্তার, গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান এবং সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন। সাক্ষাৎকালে নুরের শারীরিক অবস্থার কথা তুলে ধরেন তার স্ত্রী। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা তাৎক্ষণিকভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে বিদেশে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন,
“এ ঘটনায় আমরা সবাই মর্মাহত। নুরের সুস্থতার জন্য সরকার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিচ্ছে। তার যথাযথ চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তও চলছে।”
নুরুল হক নুরের শারীরিক অবস্থা
সাক্ষাৎকালে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন নুরের স্ত্রী মারিয়া আক্তার। তিনি জানান—
নুরুল হক নুরের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে,
নাকের হাড় ভেঙেছে,
চোয়াল ও মেরুদণ্ডে গুরুতর আঘাত রয়েছে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই জটিল শারীরিক অবস্থার কারণে দ্রুত তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়া জরুরি।
তদন্ত কার্যক্রম
এই হামলার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, বিচারপতি আলী রেজার নেতৃত্বে একটি এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে। বুধবারের মধ্যেই এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ হবে এবং ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।
উপস্থিত উপদেষ্টারা
সাক্ষাৎ ও আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন—
আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল
পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান
তাদের উপস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা আশ্বাস দেন যে, নুরুল হক নুরের চিকিৎসা এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
উপসংহার
নুরুল হক নুর বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের পরিচিত মুখ। তার ওপর সংঘটিত এ হামলা শুধু পরিবার নয়, সমগ্র জাতির জন্যই উদ্বেগজনক। প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা অনুযায়ী নুরকে বিদেশে পাঠানোর উদ্যোগ সাধারণ মানুষের মাঝে কিছুটা হলেও স্বস্তি এনে দিয়েছে। এখন দেশবাসীর প্রত্যাশা, নুরুল হক নুর দ্রুত সুস্থ হয়ে আবারও জনআন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে পারবেন এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে।
আরও পড়ুন: প্রেসিডেন্ট ও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎ