থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সীমান্তে সাম্প্রতিক সহিংসতা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। কম্বোডিয়ার সেনাবাহিনীর গোলাবর্ষণে থাইল্যান্ডের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, যার ফলে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে বেসামরিক নাগরিক ও একটি শিশুও রয়েছে। এই সংঘাতের জেরে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কে নতুন করে উত্তাপ তৈরি হয়েছে।
হামলার বিস্তারিত: বেসামরিক এলাকায় আঘাত
গত বৃহস্পতিবার ভোরে থাইল্যান্ডের সিসাকেট ও সুরিন প্রদেশে কম্বোডিয়ার সেনাবাহিনীর গোলাবর্ষণ শুরু হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী, হামলার শিকার হওয়া স্থানগুলোর মধ্যে একটি হাসপাতালও রয়েছে, যা যুদ্ধাপরাধের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন থাই স্বাস্থ্যমন্ত্রী সোমসাক থেপসুথিন।
প্রধান ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাসমূহ:
-
সিসাকেট প্রদেশ: কান্থারালাক জেলার বান ফু শহরে একটি পেট্রোল স্টেশনে গোলাবর্ষণে ৪ জন নিহত।
-
সুরিন প্রদেশ: কম্বোডিয়ার রকেট হামলায় একটি বাড়ি ধ্বংস হয়ে ২ জনের মৃত্যু।
-
হাসপাতালে আক্রমণ: বেসামরিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হামলায় আহতদের চিকিৎসা বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও বেসামরিকদের সরিয়ে নেওয়া
সংঘাতের কারণে থাইল্যান্ডের সীমান্তবর্তী ৮৬টি গ্রাম থেকে প্রায় ৪০,০০০ বেসামরিক নাগরিককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে শিশু, নারী ও বয়স্কদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়রা বালির বস্তা, কংক্রিট ও গাড়ির টায়ার দিয়ে অস্থায়ী বাংকার তৈরি করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছেন।
থাইল্যান্ডের পাল্টা আক্রমণ
কম্বোডিয়ার হামলার জবাবে থাইল্যান্ডের সামরিক বাহিনী এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে সীমান্তের ওপারে কৌশলগত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। থাই সেনাবাহিনীর দাবি, তারা কম্বোডিয়ার ‘স্পেশাল মিলিটারি রিজিয়ন কমান্ডস ৮ ও ৯’-এর ঘাঁটি ধ্বংস করেছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া
এই সংঘাত নিয়ে আল জাজিরা, রয়টার্সসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম ব্যাপক কভারেজ দিচ্ছে। থাইল্যান্ডের পক্ষ থেকে যুদ্ধাপরাধের তদন্তের দাবি উঠেছে, যা কম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে কূটনৈতিক চাপ বাড়াতে পারে।
শেষ কথা
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত নিয়ে উত্তেজনা চলছে। তবে সাম্প্রতিক এই হামলায় বেসামরিক নাগরিকদের হতাহতের ঘটনা সংঘাতকে আরও জটিল করে তুলেছে। দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক আলোচনা না হলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বিএনপির দাবি: সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কেন জরুরি?
এই সংবাদটি সম্পর্কে আপনার মতামত জানাতে পারেন নিচের কমেন্ট বক্সে।